করোনা হাসপাতালে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করার সরকারি নির্দেশিকাকে একযোগে আক্রমণ করল বিরোধীরা। অব্যবস্থা লুকাতেই সরকার এই পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি তাঁদের। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এই অভিযোগ মানা হয়নি।
সম্প্রতি বাঙুর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভিতরের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের পাশেই শায়িত রয়েছে মৃতদেহ। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের নামগন্ধ নেই গোটা ওয়ার্ডে। এর পরই বুধবার করোনা হাসপাতালের ভিতরে রোগী, চিকিৎসক ও নার্স সবার জন্য মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের তুমুল সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োটি টুইট করেছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এদিন তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালেে ফোন নিষিদ্ধ করায় অন্তত এটুকু বোঝা গেল যে ভিডিয়োটি ভুয়ো নয়।’
রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সরকার সত্য চাপা দেওয়ার জন্য যাবতীয় চেষ্টা চালাচ্ছে। হাসপাতালে মোবাইল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত তারই একটা উদাহরণ। মোবাইল ফোন থেকে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করলে সরকার আগেই তা নিষিদ্ধ করতে পারত।’
তিনি বলেন, ‘সত্য সামনে আসা থেকে রোখার সরকারের সব চেষ্টা সত্বেও এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এবার সেই পথও বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে সরকার।’
কংগ্রেস নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘হাসপাতাল কী ভাবে চলবে তা চিকিৎসকদের ঠিক করতে দেওয়া উচিত। তাতে আমলাদের এত হস্তক্ষেপ ভাল নয়।’ তবে রোগীদের কাছে অনবরত মোবাইল ফোন ব্যবহার যে ভাল নয় তা মেনে নিয়েছেন তিনি।
মান্নান সাহেব বলেন, ‘আমরা এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে সরকারের এসব সামান্য বিষয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়। বদলে সরকারের সব শক্তি রোগীদের সুস্থ করায় ও রোগ সংক্রমণ রোখায় ব্যবহার করা উচিত।’
এব্যাপারে সংবাদসংস্থাকে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘করোনা মোকাবিলার আন্তর্জাতিক বিধিতে মোবাইল ফোন থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে। তাই হাসপাতালে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ হয়েছে। এর পিছনে অন্য কারণ খোঁজা উচিত নয়।’ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।