মহাভারত খ্যাত অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ২০১৫ সালে যখন প্রথম রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন, তখন থেকেই তাঁর লড়াকু ভাবমূর্তি সবার নজর কেড়েছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়া আসন থেকে লড়াই করে হারলেও তার পরের বছরই রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। নির্বাচনী ময়দানে দাগ কাটতে না পারলেও সংগঠনের বড় পদে থেকে রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন রূপা। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সামলেছিলেন মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রীর পদ। তবে ২০২১ সালের জুন মাস, চিত্রটা বদলে গিয়েছে। রাজনৈতিক আঙিনায় সক্রিয়তা কমেছে রূপার। কিন্তু কেন?
এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, 'রাজনীতির প্রতি আমার অশ্রদ্ধা নেই। কিন্তু বর্তমানে বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে আমার জীবন দর্শন মিলছে না।' পাশাপাশি রূপা বলেন, 'আমি সক্রিয় নই বা কাজ করছি না, এমনটা নয়। আসলে যেই কাজ করছি, তার প্রচার হচ্ছে না। রাজনীতির বাইরে একটি সমাজ রয়েছে। সেখানকার কাজে আমি জোর দিচ্ছি। তবে সেই কাজে গিয়ে ছবি তুলছি না।'
রূপার অভিযোগ, 'সাংসদ কোটায় পাওয়া টাকায় রাজ্যের তিনটি হাসপাতালের উন্নয়ন করতে চেয়েও পারিনি কারণ আমি বিজেপি করি। মানুষের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে যে রাজনীতি বাধা হয়ে দাঁড়ায়, আমি সেই রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারছি না।' এদিকে রূপার আরও বক্তব্য, 'মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মা মারা গিয়েছেন, সেখানে যেতে চেয়েও পারিনি। মুকুল রায়ের স্ত্রী অসুস্থ, সেখানেও যেতে পারিনি। কারণ গেলেও রব উঠবে, আমি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চাই।' এদিকে মুকুল রায়ের দল বদল নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে সেভাবে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, দলের অন্দরেই এবিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আর বর্তমানে রাজনীতি থেকে পুরোপুরি দূরে সরে রয়েছেন তিনি। শেষবার ৮ মে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন রূপা। সেদিন ভোট পরবর্তী হিংসার বিরুদ্ধে মেয়ো রোডে বিক্ষোভে অংশ নিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন রূপা। পরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে এরপরে আর তাঁকে সেভাবে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
সূত্রের খবর, এই সময়কালে বিজেপির ভার্চুয়াল বৈঠকে সবসময় উপস্থিত থাকেননি রূপা। এরই মাঝে সোশ্যাল মিডিয়া 'বেসুরো' পোস্ট করে লেখেন, 'রাজনীতিকে গ্ল্যামারাইজ করে লাভ নেই। অনেক রক্ত ঝরলেও কেউ পাশে থাকে না।' যা নিয়ে জল্পনা বাড়লেও সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যসভার সাংসদ।