অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোয় আর সেই জাঁকজমক দেখা গেল না। একমাস হয়েছে কেষ্ট এখন জেলে। তাই চাঁদা তুলে হয়েছে এবারের কালীপুজো। ঝলমলে আলোর সাজে প্রতিমায় গয়নার সাজে ঝলসে ওঠা দেখতে পাননি কেউ। এবার এই নিয়ে খোঁচা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমনকী দুর্নীতির অর্থে জাঁকজমক পুজোর দিন অচিরেই শেষ হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ? কালীপুজোর ঠিক পর আজ, মঙ্গলবার নিউটাউন ইকোপার্কে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের পুজোর রমরমা চলছে। পশ্চিমবাংলায় যেদিন থেকে দুর্নীতি বেড়েছে, এই সারদার টাকা থেকে আরম্ভ করে কয়লা, গরু সব পাচারের টাকায় ধুমধাম করে পুজো চলে। সারদার মালিক জেলে যেতেই কিছু পুজোর রোশনাই কমে গেল। যে পার্থবাবু এত ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করতেন কোথায় কী! কেষ্টবাবুর কালীপুজো এত ধুমধাম করে হতো, ভরি ভরি গয়না চাপিয়ে, সেটাও হয়নি। এই ধরনের অপকর্ম করে পুজো করা, ভগবানের আরাধনা করা ঘোর অন্যায়। এগুলি বন্ধ হওয়ার দরকার আছে। বন্ধ হওয়ার সময়ও এসে গিয়েছে।’
ঠিক কী হতো কেষ্টর কালীপুজোতে? বোলপুরের তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে যে পুজো হয়, সেটা কেষ্টর কালী পুজো হিসেবেই জানেন সবাই। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই পার্টি অফিসে সেই পুজো করে আসছেন তিনি। তাতে কোনও দিন ছেদ পড়েনি তাতে। এমনকী কালীপুজোয় নিজের হাতে মাকে গয়না পরাতেন অনুব্রত মণ্ডল। কালীপুজোয় এখানে সাধারণ মানুষের অবাধ যাতায়াত থাকত। রাতে প্রায় কয়েক হাজার কর্মী–সমর্থক ও সাধারণ মানুষ কালীপুজোয় প্রসাদ খেতেন। গতবছর তা প্রায় ৫৭০ ভরি ছিল। কেষ্ট মণ্ডল নিজে সাজাতেন মাকে। এবার তাঁর পুজো ম্লান।
ঠিক কী বলছেন জেলা তৃণমূলের সহ–লভাপতি? বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসর সহ–সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যে পুজোটা আমরা এখানে পার্টি অফিস করার পর থেকে শুরু হয়েছে, সেটা কেষ্ট কালী হিসাবে পরিচিত হয়েছে। কারণ তিনিই দায়িত্ব নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে সব সামলাতেন। রাজগ্রাম থেকে শুরু থেকে মুরারই, খয়রাশোল, নানুর, লাভপুর এমনকী বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গা থেকেও মানুষ আসতেন এই পুজোতে। তাঁর অনুপস্থিতিতে আনন্দ তো নেই, প্রাণটাও নেই। মায়ের পুজো, সময় তো থেমে থাকে না। তাই যতটুকু নিষ্ঠাভরে করা যায় ততটাই করছি।’