বিজেপির রাজ্য সভাপতির নাম কী? এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে রাজ্য– রাজনীতিতে। তাঁর নাম কি সুকান্ত ভট্টাচার্য? বিজেপির বৈভবের প্রশিক্ষণ শিবিরে বঙ্গ বিজেপি সভাপতিকে এই নামেই সম্বোধন করা হল। যা শুনে দলের নেতা–নেত্রীদের মধ্যে উঠল হাসির রোল। আবার কারও কারও মাথায় উঠল হাত। সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ। তিনিই এই নাম–পদবি উচ্চারণ করেছেন বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী ঘটেছে বৈদিক ভিলেজে? নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের কর্মসূচিতে রাজ্য সভাপতির স্বাগত ভাষণ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তখন মঞ্চে বালুরঘাটের সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতিকে বরণের প্রস্তুতি তুঙ্গে। সূত্রের খবর, এমন সময় দীপক বর্মণ ঘোষণা করেন, এবার আমাদের রাজ্য সভাপতি ‘সুকান্ত ভট্টাচার্য’–কে বরণ করে নেবেন ...। এই কথা বলা মাত্রই কয়েকশো নেতা–নেত্রী কার্যত রে রে করে ওঠেন। চরম অস্বস্তিতে পড়ে যান সুকান্ত নিজেই। সেখানেই দলের কিছু নেতা উচ্চগ্রামে বলে ওঠেন, রাজ্য সভাপতির নাম জানেন না! উনি তো সুকান্ত মজুমদার।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই বৈভবের প্রশিক্ষণ শিবিরে দেখা যায়নি ৬ বিজেপি সাংসদকে। তার মধ্যে চারজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সভাপতির পদবি ভুল বলে আলোড়ন ফেলে দেওয়া হয়েছে। দলীয় নেতাদের একাংশের কটাক্ষ, রাজ্য সভাপতির গুরুত্ব এমন যে একবছর হতে চললেও সতীর্থ সাধারণ সম্পাদকই তাঁর নাম মনে করতে পারছেন না! প্রশিক্ষণ শিবিরে কেলেঙ্কারির এখানেই শেষ নয়। তারও আগে শিবির শুরু করতে গিয়ে পা হড়কে যায় আয়োজকদের। পরম্পরা অনুযায়ী, বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরের সূচনা ও সমাপ্তি হয় ‘গীত’ দিয়ে। দলের সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পল ‘বন্দেমাতরম’ পরিবেশন করেন। দু’চার লাইন গেয়েই সেলিব্রিটি এই বিধায়ক বসে যান। তখনই দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর কড়া নির্দেশ আসে, গাইতে হবে আনন্দমঠের পূর্ণাঙ্গ ‘বন্দেমাতরম’। তা শুনে বিজেপির অধিকাংশ ‘গায়ক-গায়িকা’ চুপসে যান। শেষমেশ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী অনেক কসরত করে পূর্ণাঙ্গ গীত পরিবেশন করেন বলে সূত্রের খবর।
কেমন আয়োজন হয়েছে সেখানে? বৈদিক ভিলেজে বিজেপি নেতাদের মধ্যাহ্নভোজের মেনুতে ছিল—ভাত, রুটি, ডাল, বেগুনি, রুইমাছের কালিয়া, চিকেন এবং মিষ্টি। পাঁচতারা রিসর্টে নেতাদের রাত্রিবাসের এলাহি আয়োজন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সহ–পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ফাইভ স্টার কালচারে অভ্যস্ত। এদিনের চিন্তন শিবিরে অনুপস্থিত ছিলেন নিশীথ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর এবং জন বারলা। তাঁদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসেননি দুই এমপি কুনার বেমব্রম এবং এস এস আহলুওয়ালিয়া। ইংলিশবাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র অবশ্য করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আসতে পারেননি বলে সূত্রের খবর।