বউবাজারে মেট্রোর কাজের জন্য ফের ফাটলের জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবিমৃশ্যকারিতাকে দুষলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, উনি রাজনীতির স্বার্থে সব পরিকল্পনা করেছেন তাই এই ধরনের বিপদ হচ্ছে।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘তৃণমূলের পার্টির মধ্যে ফাটল ধরে যাচ্ছে, আর বউবাজারে ফাটল ধরবে না? কোনও পরিকল্পনা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেট্রোর পথকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। আসল মানচিত্র ছিল সেটাকে বাদ দিয়ে ঘুরিয়েছেন বলেই আজ এই দুর্দশা। রাজনীতির স্বার্থে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, রাজনীতির স্বার্থে সব পরিকল্পনা করেছেন, আর কাট মানি তুলেছেন। তাই কোর্ট আজকে কান মলা দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের জন্য আজ পশ্চিমবঙ্গে এই সমস্ত সমস্যা তৈরি হয়েছে’।
বউবাজারে ফের ফাটলে উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মেট্রোর উচিত পুরো এলাকাটা ভেঙে ফেলে ভালো করে পাইলিং করে বহুতল নির্মাণ করা। সেখানে যে যত স্কোয়্যারফিট জায়গায় ছিল সমান জায়গা পাবে। কারণ এই সরু গলিতে আর তিন – চার তলা বাড়ির অনুমতি দেওয়া যাবে না। আর এছাড়া কোনও সমাধান দেখতে পাচ্ছি না’।
হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে বিকট শব্দে থমকে গেল ট্রেন, হলদিয়া–হাওড়া লোকালে কী ঘটল?
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কলকাতার বউবাজারের মদন দত্ত লেনে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন স্থানীয়রা। ২০১৯ সালে এই গলিরই পাশের গলি দুর্গা পিতুরি লেনে ফাটলের জেরে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। মেট্রো রেলের ঠিকাদার সংস্থা KMRCL-এর তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ১০টি বাড়িতে ফাটল ধরা পড়েছে। বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ইস্ট – ওয়েস্ট মেট্রোর মাস্টার প্ল্যানে মেট্রোর লাইন শিয়ালদা স্টেশন থেকে সেন্ট্রাল – মহাকরণ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল হাওড়া ময়দানে। ফলে সেন্ট্রাল স্টেশনে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর লাইনের জন্য আগে থেকেই অনেক পরিকাঠামো তৈরি করে রাখা ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে মেট্রোকে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তনে বাধ্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেট্রোর লাইন শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেড – মহাকরণ হয়ে হাওড়া ময়দানে নিয়ে যেতে হবে বলে দাবি তোলেন তিনি।
দাবি না মানলে রাজ্য সরকার কাজ শুরুর অনুমতি দেবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। মমতার চাপের মুখে অবশেষে বাড়তি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দাবি মেনে নেয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এর ফলে শিয়ালদা থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোনও স্টেশন তৈরি সম্ভব নয় বলে জানায় তারা। এমনকী এর জেরে বউবাজারের মতো বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে তখনই সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কোনও কথায় কান দেননি মমতা।