একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর খুন হয়েছিলেন কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য–রাজনীতি। কারণ এই খুনের পর মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আর তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল সিবিআইকে। কিন্তু তারপরেও মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারকে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাঁদের। এই বিষয়টিও মামলায় যুক্ত করা হয়। আর আজ সোমবার এই মামলার শুনানিতেই অভিজিৎ সরকারের মা এবং ভাইয়ের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিন নিরাপত্তার প্রসঙ্গটি তোলা হয়। আর তখনই এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আগে নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ। সেটাও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারকে বারবার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া পুলিশ সহযোগিতা করছিল না বলে অভিযোগ তোলা হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই আবহে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন অভিজিতের বাড়ির সদস্যরা। এই নিয়ে পুলিশ বিভাগীয় তদন্ত করছে।
এদিকে এই বিজেপি কর্মী খুনের মামলায় মূল সাক্ষী অভিজিৎ সরকারের মা এবং ভাই। তাই তাঁদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় আগে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এখন রাজ্যে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী মাওবাদী অপারেশনের কাজে ব্যস্ত। কিন্তু সেটা এখন সেভাবে প্রয়োজন পড়ছে না। তাই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিল নিরাপত্তা দিতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। এদিনের সওয়াল–জবাব শুনে এমনই নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
আরও পড়ুন: ‘উপোসের দিন ডেকে এনেছে বিধানসভায়’, অধিবেশনের শুরুতেই সরব শুভেন্দু
ঠিক কী জানান বিচারপতি? এই খুনের মামলা এবং নিরাপত্তা নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিচারপতি আজ ভরা এজলাসে বলেন, ‘খুনের ঘটনায় সাক্ষী দু’জন। আগেও দু’বার তাঁদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা যতদিন না হচ্ছে ততদিন নারকেলডাঙা থানা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।’ সুতরাং অভিজিৎ সরকারের বাড়িতে কয়েকদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে যাবে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরেই খুন হন অভিজিৎ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতারা সেই ঘটনায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই রাজ্য পুলিশের হাত থেকে এই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছিল সিবিআইকে।