সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ৮২ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়ির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবী পুত্রবধূ। অথচ ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিল। পুলিশের কাছে তা নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন বৃদ্ধা। কিন্তু, কোনও পদক্ষেপ না করে উলটে মহিলা আইনজীবীর অভিযোগ পেয়েই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে পুলিশ। এফআইআর করার পাশাপাশি এ নিয়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করে। পুলিশের এমন ভূমিকায় কার্যত বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট। এনিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার পাশাপাশি এফআইআর এবং চার্জশিট খারিজ করে দিলেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল। সেক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ‘সরকার চাইলে ম্যাজিক…’,দুই সপ্তাহের মধ্যে স্কুলে জলের সংযোগ আনতে বলল হাইকোর্ট
জানা গিয়েছে, পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সোনারপুরের বাসিন্দা অনুপম সর্দার। তিনি এবং তার স্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। তার বাড়িতে রয়েছে দাদা বৌদি, ছোট বোন এবং বৃদ্ধা মা। তাদের অভিযোগ, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে সমস্যা চলছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ এক্ষেত্রে পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি। শুধুমাত্র বৃদ্ধার পুত্রবধূ একজন আইনজীবী বলে পুলিশ এফআইআর করার পরে চার্জশিট জমা দিয়েছে। অনুপম বাবুর অভিযোগ, তার দাদা এবং বৌদি তার বৃদ্ধা মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হেনস্থা করেছেন। তিনি এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।
তিনি আদালতে অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র মহিলা আইনজীবীর অভিযোগ পাওয়ার পরেই পদক্ষেপ করে। কোনও ধরনের অনুসন্ধান করেনি। কোনও রকমের তদন্ত না করেই থানার মধ্যেই সাক্ষী নিয়ে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। সে ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন অনুপম। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি মন্তব্য করেন, পুলিশ ঠিকমতো ভূমিকা পালন করেনি। মামলার কেস ডায়েরি দেখার পরেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। মহিলা আইনজীবী অভিযোগ করেছিলেন, তাকে মারধর করা হয়েছে অথচ তার শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাতে কোনও সাক্ষীও নেই। অন্যদিকে, বৃদ্ধা মাকে ঘরছাড়া করে বাড়ি দখল করেন আইনজীবী এবং তার স্বামী। কিন্তু সেক্ষেত্রে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। পুলিশের ভূমিকা ‘আশ্চর্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি।