শিশুর অধিকার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন স্বামী। স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাকারীর অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে মারতেন স্ত্রী। আর তাই সন্তানের অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন তিনি। এই মামলার শুনানি চলাকালীনই বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ স্বামী-স্ত্রীকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘নিজেদের লড়াইয়ে সন্তানকে শিখণ্ডী করবেন না। তাকে এই বিবাদ থেকে বাইরে রাখুন, নয়ত এর ভার আগামীতে তাকেই বইতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে বিয়ে হয়েছিল মার্কিন নিবাসী গুগলের ইঞ্জিনিয়ার প্রণব খৈতান ও নেহা সিংহের। প্রণব নিউ আলিপুরের বাসিন্দা। নেহা রৌরকেলার বাসিন্দা। বিয়ের পর দু’জনে আমেরিকা গেলে সেখানে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এর মধ্যেই ২০১৬ সালে জন্ম নেয় তাঁদের পুত্র সন্তানের। জন্মসূত্রে তাঁদের সন্তান মার্কিন নাগরিক। এবার সেই সন্তানেরই অধিকার চাইছেন স্বামী ও স্ত্রী।
প্রণবের অভিযোগ, তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে মারধর করতেন নেহা। প্রণবের আইনজীবীর যুক্তি, মার্কিন আইন অনুযায়ী সন্তানের উপর অত্যাচার হলে, অভিভাবকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেই মতো নেহার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সেদেশের পুলিশ। মার্কিন আদালতে এই মামলা ওঠে। তবে মামলা চলাকালীনই নাকি ছেলেকে নিয়ে দেশে চলে আসেন অভিযুক্ত নেহা। এরই মাঝে ২০১৯ সালে মার্কিন আদালত নির্দেশ দেয়, বাবার কাছে সন্তানকে অবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে।
কিন্তু আমেরিকার আদালতের নির্দেশের পরও নিজের সন্তানকে ফিরে পাননি প্রণব। শুনানির সময় বিচারপতি শিবজ্ঞানমের মন্তব্য করেন, ‘শিশুটি খুব বুদ্ধিমান। আপনাদের ইগোর লড়াইয়ে ওকে ভুগতে হবে। আমরা মায়ের থেকে শিশুকে আলাদা করতে চাইছি না। কিন্তু শিশুটি বড় হলে বাবার খোঁজ করলে কী উত্তর দেবেন?’ শুনানি শেষে আদালত নির্দেশ দেয়, ছেলের সঙ্গে রোজ ভিডিয়োকলে কথা বলতে পারবেন বাবা প্রণব।