আইআইটি খড়গপুরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠাও কলকাতা হাইকোর্ট। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এছাড়াও পুলিশকে কেস ডায়েরি জমা দিতে বলেছেন। একইসঙ্গে এই ঘটনায় খড়গপুর টাউন থানার তদন্তকারী অফিসার এবং উচ্চপদস্থ কোনও পুলিশ আধিকারিককে উপস্থিত থাকতে বলেছেন বিচারপতি।
ফয়জানের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে তার পরিবার। তাদের বক্তব্য, ঠিকমতো তদন্ত করছে না পুলিশ। এই ঘটনাকে পুলিশ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও তা মানতে নারাজ ফয়জানের বাবা মা। অবশেষে ঘটনার ১৫ দিন পর তারা কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন। ঘটনায় সিআইডি বা সিট গঠন করে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন ফয়জানের বাবা-মা।
অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ফয়জানের বাবা সেলিম আহমেদ এবং মা রেহানা আহমদের বক্তব্য, এই ঘটনায় নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে না পুলিশ। তাদের দাবি, গত কয়েক মাসে ফয়জান যাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছে কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি পুলিশ। শুধুমাত্র হোস্টেলের নিরাপত্তা রক্ষী এবং তার কয়েকজন বন্ধুকেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আইআইটি কর্তৃপক্ষ অবসাদের কারণে ফয়জান আত্মহত্যা করেছে বলে যে দাবি করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তার বাবা সেলিম আহমেদ। তার অভিযোগ, আইআইটিতে ফয়জান ভালোই ফল করেছিল। তারপরে কী কারণে তার অবসাদ? সে বিষয়টি কোনওভাবেই স্পষ্ট হচ্ছে না।
ঘটনার এতদিন কেটে যাওয়ার পরেও কেন ময়নাতদন্তে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফয়জানের মা রেহানা। আদালতের নির্দেশ, এই মামলায় ভিসেরা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সেইসঙ্গে মৃত ছাত্রের সঙ্গে যার ফোনে যার শেষ কথা হয়েছিল সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজনে সকল সাক্ষীর গোপন জনববন্দি রেকর্ড করতে হবে।তাছাড়া, খড়্গপুর আইআইটি-তে র্যাগিং রুখতে কী ব্যবস্থা রয়েছে তাও খতিয়ে দেখতে বলেছে আদালত। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।