রাজ্যের বিরুদ্ধে অ্যাসিড আক্রান্তদের ঠিকমতো ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তা নিয়ে বহু মামলাও হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সংক্রান্ত একটি মামলায় অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলারা যাতে নিয়মিত পেনশন পেতে পারেন তার জন্য রাজ্য সরকারকে প্রকল্প তৈরি করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের মতে, অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলাদের কীভাবে কর্মসংস্থান হবে? সে বিষয়ে কোনও দিশা নেই। তারফলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অ্যাসিড আক্রান্তদের যেমন সমস্যায় পড়তে তেমনিই কীভাবে খরচ জোগাড় করবেন তা সমস্যায় পড়তে হয়। সেই কারণে এমন দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: NCRB Report: অ্যাসিড হামলায় যোগীর রাজ্যকে পিছনে ফেলে আবারও এগিয়ে বাংলা
কত দিনের মধ্যে এই প্রকল্প তৈরি করতে হবে তার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প তৈরি করতে হবে। উল্লেখ্য, অ্যাসিড আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র এবং সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব গাইড লাইন রয়েছে। কিন্তু, অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে সেই গাইডলাইন মানছে না রাজ্য সরকার। তাছাড়া অ্যাসিড আক্রান্তদের কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থা নেই বলে বিচারপতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারীর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, অ্যাসিড আক্রান্তদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচারের খরচ রয়েছে। ক্ষতিপূরণ পেলে সেই অর্থ তারা চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহার করতে পারেন ঠিকই। কিন্তু তারপরে তাদের কর্মসংস্থান কীভাবে হবে বা সংসার কীভাবে চলবে? তা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেক মহিলা অ্যাসিড আক্রান্ত হওয়ার পরে কাজ হারিয়েছেন। এই অবস্থায় বাকি জীবন তাদের সংসার কীভাবে চলবে? তাই নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে যায়। সেই কারণে সরকার যাতে তাদের পেনশনের ব্যবস্থা করে সে বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন মামলাকারীর আইনজীবী। সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যকে প্রকল্প তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, আরও একটি মামলায় এক অ্যাসিড আক্রান্ত এক তরুণীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বেশ কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর ববি শরাফ ওই তরুণীকে ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর হয়নি। সেই সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মুখ্য সচিবকে অর্থ বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই সময়ের চার সপ্তাহের মধ্যে লিগাল সার্ভিস অথরিটির তরফে নির্যাতিতার হাতে ওই টাকা তুলে দিতে হবে বলে আদালতের নির্দেশ।