অনুব্রত মণ্ডলকে বাবা বলে ডাকতেন তিনি। অনুব্রতর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল তাঁর সম্পত্তিও। বোলপুর পুরসভার কর্মী সেই বিদ্যুৎবরণ গায়েনকে অবশেষে আটক করল সিবিআই। বুধবার তাঁকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ বারাসত থেকে আটক করেন গোয়েন্দারা। তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
গত রবিবার বোলপুরে বিদ্যুৎ গায়েনের একাধিক সম্পত্তিতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। একই পাড়ায় একের পর এক জমি ও বাড়ি কিনে কয়েক বছরের মধ্যে ধনকুবের হয়ে উঠেছিলেন এই ব্যক্তি। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ২০১১ সালের আসে বোলপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী ছিলেন বিদ্যুৎবরণ। পুরসভার ট্রাকের খালাসি ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে স্থায়ী হন। তার পর থেকে অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী হিসাবে পরিচিত হন। ওদিকে পুরসভা সূত্রের খবর, অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন বিদ্যুৎবরণ। বেশ কয়েক মাস ধরে পুরসভায় আসছেন না তিনি।
রবিবার বোলপুরে বিদ্যুৎবরণের বাড়িতে তল্লাশি চালালেও তাঁর দেখা পাননি গোয়েন্দারা। এর পর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করেন তাঁরা। তাতে দেখা যায় দক্ষিণ বারাসতে কোনও এক আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। বুধবার সেখান থেকেই আটক করা হয়েছে তাঁকে।
আসানসোলের পথে শক্তিগড়ে প্রাতঃরাশ সারলেন অনুব্রত মণ্ডল, কী ছিল তাঁর মেনুতে?
সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রত যে সমস্ত ব্যক্তিদের নামে বেনামি সম্পত্তি কিনতেন তার মধ্যে প্রধান এই বিদ্যুৎবরণ। অনুব্রতর কারবারের বিশাল অংশ দেখাশুনো করতে ন তিনি। অনুব্রতকে বাবা বলে সম্মোধন করতেন বিদ্যুৎ। এমনকী অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের সঙ্গেও তাঁর আত্মীয়তার সম্পর্ক।
গোয়েন্দাদের আশা, অনুব্রত যখন তদন্তে সাহায্য করছেন না তখন তাঁদের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন এই বিদ্যুৎ গায়েন। ফলে কলকাতায় এনে খাতায় কলমে তাঁকে গ্রেফতার দেখানো সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের মুখ থেকে কথা বার করা গেলে তা অনুব্রতর বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া অনুব্রতর আরও বেনামি সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যেতে পারে বিদ্যুৎ গায়েনের কাছ থেকে।
‘এটা নিয়ম আছে না কি? বললেই হয়ে যাবে!’, আত্মবিশ্বাসী মেজাজে জবাব অনুব্রতর
বোলপুর নিচুপট্টির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অনুব্রতর গ্রেফতারির পর থেকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বিদ্যুৎ গায়েনকে। কী ভাবে কয়েক বছরের মধ্যে তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন তা চোখে পড়ার মতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির দাবি, পুলিশ প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে এলাকায় বিভিন্ন বাড়ি ও জমি কার্যত জবরদখল করেছে বিদ্যুৎ গায়েন ও তার দলবল।