আজ, বুধবার সিবিআই হেফজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। আর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে। নিজাম প্যালেস থেকে বেরনোর সময় তাঁকে আজ প্রবল আত্মবিশ্বাসী মেজাজে দেখা যায়। একের পর এক মন্তব্য করেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে দেখা গিয়েছিল বিধ্বস্ত, অসুস্থ অবস্থায়। কিন্তু বুধবার সকালে হঠাৎই যেন বদলে গেল অনুব্রত মণ্ডলের শরীরী ভাষা।
ঠিক কী বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল? এদিন আসানসোল বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেছেন, যথেষ্ট করেছেন। বিচারককে হুমকি চিঠি দেওয়া নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলব।’ তখনই অনুব্রতকে প্রশ্ন করা হয়, সিবিআই যদি তাঁকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যেতে চায়? জবাবে অনুব্রত বলেন, ‘এমন কোনও নিয়ম আছে নাকি।’ এদিন সাংবাদিকরা জানতে চান, সিবিআই বলছে আপনাকে জামিন দিলে আপনি তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করবেন। জবাবে অনুব্রত বলেন, ‘আমারটা আমি বুঝে নেব।’ এমন মেজাজ আগে দেখা যায়নি সিবিআই হেফাজতে আসার পর থেকে।
কেন ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে? সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলকে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। এই তকমা লাগাতে পারলেই তাঁকে ভিন্ রাজ্যে পাঠানো হতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এই নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে বুধবার প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন— ‘এটা নিয়ম আছে না কি? বললেই হয়ে যাবে!’ সুতরাং সিবিআই চাইলেই যে হবে না সেটা তিনি স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি খবর পেয়ে গিয়েছেন বনগাঁ–আসানসোল পুরসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছেন। আর তাঁকে আসানসোলেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাই তিনি আত্মবিশ্বাসী বলে মনে করা হচ্ছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে জেরা করার জন্য আজ আদালতের কাছে আবেদন করতে চলেছে সিবিআই। তবে আদালতে যাওয়ার আগে অনুব্রতর এই হঠাৎ আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকী আত্মবিশ্বাসী মেজাজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর শরীর ভাল আছে। আর এখান থেকে মামলা বাইরে নিয়ে যেতে সওয়াল করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।