বিধানসভায় পাশ হয়ে গিয়েছিল আচার্য বিল। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীই হবে রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। তবে সেই বিল আইনে পরিণত হয়নি। কারণ রাজ্যপাল তাতে সই করেননি। ফলে আটকে রয়েছে পাশ হওয়া বিল। এটা নিয়ে নানাভাবে তাঁকে বলা হলেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাতে সাড়া দেননি। এই নিয়ে আগে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও সুর চড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ তো হয়নি। উলটে রাজ্যপাল একক সিদ্ধান্তে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে শুরু করেন। এবার এই বিলটি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র এবং আরও কয়েকজন অধ্যাপক।
এই একক সিদ্ধান্তে উপাচার্য নিয়োগ করা এবং একের পর এক উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে মামলায় হেরে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উলটে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কফির টেবিলে বসে সমস্যা মেটাতে নির্দেশ দেয়। এমনকী অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যাবে না বলেই নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। এই ঘটনার পর এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে রাজ্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হওয়া এবং ২০২২ সালের জুন মাসে বিধানসভাতে আচার্য বিল পাশ হয়ে যায়। এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে ভোট দেন ১৮২ জন বিধায়ক, আর বিপক্ষে ভোট দেন ৪০ জন। রাজ্যপাল সই করলেই তা কার্যকর হয়।
এদিকে এই বিলে রাজ্যপাল সই করা তো দূরের কথা একবারও আলোচনাও করেননি। আর রাজ্য মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা এবং রাজ্যের মানুষজন চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীই হোক আচার্য। তাহলে তিনি নিজেই সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উন্নতি হওয়া সম্ভব। একইসঙ্গে স্থায়ী উপাচার্য পেলে পঠনপাঠন সঠিক পথে চলে। কিন্তু রাজ্যপাল এখনও তাতে সই করেননি। তার জেরে আচার্য বিল এখনও আটকে আছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্যপালের কাছে এরকম একাধিক বিলই আটকে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’, বেআইনি পার্কিং নিয়ে হুঙ্কার মেয়রের
অন্যদিকে এই বিল আইনে পরিণত হলে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে একদিকে লাভই হবে। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অধ্যাপক এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় যে পরিকাঠামো দরকার হয় তার জন্য আর অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী তথা আচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই চলবে। এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় ও তার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তও দ্রুত নেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু আচার্য বিলে সিলমোহর না দেওয়ায় সেটা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। তবে শুরু থেকেই এই বিলের বিরোধিতা করেছেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও আচার্য হতে পারবেন না।