আবার উপাচার্যদের চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আগেও তিনি চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের সাপ্তাহিক রিপোর্ট তলব করেছিলেন। এবারও একই কাজ করতে তিনি চিঠি পাঠালেন বলে সূত্রের খবর। বহু উপাচার্য রাজ্যপালের চিঠির পর সেই নির্দেশ পালন করেননি। তাই আবার দ্বিতীয় চিঠি পাঠানো হল। আর সেখানে প্রথম চিঠির কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাপ্তাহিক অ্যাক্টিভিটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে ওই চিঠির মাধ্যমে। রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে সাপ্তাহিক অ্যাক্টিভিটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এদিকে এই চিঠি দিয়ে ক্ষান্ত হননি রাজ্যপাল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে তিনজন করে সিনিয়র অধ্যাপকদের নামের তালিকা আবার চেয়ে পাঠিয়েছেন। কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়ে পাঁচজন করে সিনিয়র অধ্যাপকদের নামের তালিকা চেয়েছিল রাজভবন। সূত্রের খবর, সেই চিঠির পেয়েও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় নাম পাঠাইনি। তাই আবার নতুন করে চিঠি দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ফলে সংঘাত তৈরি হয়েছিল বিকাশ ভবন বনাম রাজভবনের মধ্যে। সেই রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই রাজ্যপাল নতুন করে চিঠি পাঠিয়ে বসলেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আসার বিল বিধানসভায় গৃহীত হলেও এখনও রাজ্যপাল তা ছাড়েনি। তাই নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। আজ, সোমবার বিধানসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘বিল রাজ্যপালের থেকে বিধানসভায় আসেনি। এটা রাজ্যপাল নিজেও জানেন। বিল পাঠানোর পর তিনটি পর্যায় আছে। এখনও জানতে পারিনি, বিলের কি পরিণতি। কিছু কিছু বিল এসেছে। পরিষদীয় দল এবং মন্ত্রী খবরাখবর নেবেন।’
সংঘাতের বাতাবরণ কি তৈরি হবে? অবিলম্বে ওই বিলে যাতে স্বাক্ষর করা হয় তা নিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে রাজভবনে। সুতরাং সেটা না করে উপাচার্যদের চিঠি পাঠানো কখনই ভাল চোখে দেখবেন না শিক্ষামন্ত্রী। কারণ শিক্ষা দফতরকে এড়িয়ে এমন চিঠি পাঠানোর তিনি বিরুদ্ধে। সেটা তিনি আগেও জানিয়ে দিয়েছিলেন। সুতরাং সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হতেই পারে। অর্থাৎ সম্ভাবনা আছে। আবার উপাচার্য নিয়োগের আইনে বদল করে সার্চ কমিটি নতুন করে গঠন করা হয়েছে। রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য উচ্চশিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে এককভাবে আচার্য নিয়োগ করছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। তারপরেও এমন চিঠি পাঠানো সংঘাতের বাতাবরণ তৈরির ক্ষেত্রে যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।