পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। সুপার সাইক্লোনের রূপ যে ঝড়টি তার নামকরণ হয়েছিল ১৬ বছর আগে। ২০০৪ সালে থাইল্যান্ড নামকরণ করেছিল এই ঝড়ের। ঝড়ের নামকরণের সেই ছিল প্রথম পর্যায়। তার আগে নিয়ম মেনে ঝড়ের নামকরণ হত না বিশ্বে।
আবহবিদদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে ঝড় সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দিতে তার নাম থাকাটা দরকারি। নইলে একই সময় একই সমুদ্রে একাধিক ঝড় থাকলে চিহ্নিত করতে সমস্যা হয়। ঝড় চলে গেলেও একই সমস্যায় পড়েন আবহবিদরা।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে যে মহাসাগর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকায় থাকা দেশগুলি তার নামকরণ করে। চলতি শতকের শুরুর দিকে এই পদ্ধতি চালু হয়। সারা পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে।
যদিও কয়েক দশক আগে এসব নিয়ম ছিল না। তখন নানা ঘটনা থেকে ঝড়ের নাম ঠিক হত। কোনও ঝড়ে কোনও জাহাজ ডুবে গেলে সেই জাহাজের নামে হত ঝড়ের নাম। ২০০০ সালে ঝড়ের নামকরণের জন্য নিয়ম বানানো হয়। তাতে ওয়ার্ল্ড
মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইডেট নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। সমস্ত দেশের কাছ থেকে ঝড়ের নাম চাওয়া হয়। তার থেকে দেশ প্রতি ৮টি করে নাম বাছাই করে মোট ৬৪টি ঝড়ের নামকরণ করা হয়। সেই তালিকায় শেষ নাম ‘আমফান’।
২০১৮ সালে ওই আটটি দেশের সঙ্গে যোগ করা হয় আরও ৭টি দেশকে। মোট ১৩টি দেশের থেকে চাওয়া হয় নতুন নাম। দেশপিছু ১৩টি করে নাম নিয়ে তৈরি হয় ১৬৯টি ঝড়ের নামের তালিকা। সেই তালিকা অনুসারে আমফানের পরবর্তী ঝড়ের নাম হবে ‘নিস্বর্গ’। এই নাম দিয়েছে বাংলাদেশ। তার পরের ঝড়টির নাম হতে ‘গতি’ (ভারত) ও তার পরের ঝড়টির নাম হবে নিভার (ইরান)।