মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের পরই শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন জল্পনা চরমে তখনই তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উসকে দিলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে শুভেন্দুর। তবে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নেই বলেও দাবি করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
এদিন উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে এক দলীয় জনসভায় যোগ দিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘আগে থেকে বোঝা যাচ্ছিল শুভেন্দুবাবু পার্টি ছাড়তে পারেন। ওই পার্টিতে থাকার মতো পরিবেশ নেই। আমি আগেই বলেছিলাম। এটা তৃণমূলের মুষল পর্বের শুরু হল। পার্টিটাই উঠে যাবে। কারণ যে ধরণের স্বৈরাচারী আর অত্যাচারী সরকার চলছে এটা পশ্চিমবঙ্গের মতো গণতন্ত্রপ্রিয় সমাজে চলতে পারে না’।
শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ হয়েছে কি না এই প্রসঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, ‘আমাদের লোকেদের যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নিশ্চই আছে। অর্জুনদা বলেছেন, ৫ জন সাংসদ না কি আসতে চান। নিশ্চই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। যাদের দম বন্ধ হয়ে আসছিল তারা ছাড়তে আরম্ভ করেছেন। শুভেন্দুবাবু বিজেপিতে আসতে চাইলে নিশ্চই সমাদরে তাঁকে নিয়ে নেব। তবে আমার সঙ্গে ওঁর এখনো সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। শুভেন্দু পার্টি ছাড়লে তৃণমূলের অনেক যুব নেতা পার্টি ছেড়ে দেবেন’।
শুভেন্দুর পদত্যাগকে হাতিয়ার করে এদিন ফের তৃণমূলকে চরম কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, ‘তৃণমূল কোনও পার্টি নয়, ওটা একটা মেলা। সার্কাস পার্টি চলে। মালিক আর ডায়রেক্টর রয়েছেন। বাকিরা কর্মচারী হিসাবে কাজ করেন। যারা কর্মচারী থাকতে চান না, সম্মানের সঙ্গে পার্টি করতে চান তাঁরা আর সেখানে থাকতে পারছেন না। ভারতীয় জনতা পার্টি দরজা খুলে রেখেছে। যারা বাংলার পরিবর্তনের জন্য লড়াই করতে চান তাঁরা আসুন’।
শুভেন্দু বিজেপিতে এলে স্বাগত বলে এদিনও খোলাখুলি জানান দিলীপ। বলেন, ‘কৈলাস বিজয়বর্গীয় গতকাল শুভেন্দুকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমিও বলব আসুন। সৌমিত্র খাঁ-সহ আমাদের অনেক নেতা ওই পার্টি থেকে এসেছেন। ১০ জন বিধায়ক এসেছেন, ৩-৪ জন সাংসদ এসেছেন। সবাই সম্মানের সঙ্গে কাজ করছেন। ওনার মতো লড়াকু লোক, তাঁকেও আমরা জায়গা দেব’।
শুক্রবার দুপুরে রাজ্যের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। সঙ্গে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকেও পদত্যাগ করেন শুভেন্দু। গতকাল HRBC-র চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ইস্তফা নিয়ে প্রকাশ্যে এখনো মুখ খোলেননি শুভেন্দু।