হাতে আর চারদিন। তারপরই শুরু হয়ে যাবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। কিন্তু রাস্তায় বেরোলে কেউ বুঝতে পারবেন না যে, এখনও দুর্গাপুজো চারদিন দেরি আছে। কারণ মানুষের ঢল তো এখন থেকেই নেমে গিয়েছে। প্রতিপদেই দেখা গেল, গড়িয়াহাট থেকে শুরু করে নিউ আলিপুর পর্যন্ত ভিড় উপচে পড়ল। ঠাকুর–মণ্ডপ দেখতে এখনই সবাই বেরিয়ে পড়েছে। অনেক খুদে শিশুকেও বাবা–মায়ের হাত ধরে দেখতে পাওয়া গেল রাস্তায়। বেলা গড়াতেই উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার প্যান্ডেলগুলিতে মানুষের জমজমাট ভিড় বুঝিয়ে দিল, দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গিয়েছে।
এদিকে সকালে খান্না মোড়ের হরি সাহা হাট ভিড় যানজটের সৃষ্টি করেছে। দুপুরে ভিড়ের জেরে গড়িয়াহাটে হাঁটা যাচ্ছিল না। বিকেলে শ্রীভূমির দুর্গাপুজোর জন্য বাইপাস এবং ভিআইপি রোডে কার্যত চাক্কা জ্যাম মনে হচ্ছিল। সন্ধ্যাবেলায় কলকাতার রাস্তায় থিকথিকে ভিড়। বিধান সরণি দেখে মনে হচ্ছিল সপ্তমীর সন্ধ্যা। সুতরাং দুর্গাপুজো জ্বরে কাবু মহানগরী। লম্বা যানজটকে সঙ্গী করেই মানুষের ঢল নেমেছে শহরে। কাঁকুড়গাছি মিতালি সংঘের পুজোমণ্ডপে ভিড় ছিল ঠাসা। সেখানে মণ্ডপের ছবি ক্যামেরাবন্দি করছিলেন অনেকে। সঙ্গে তো দেদার সেলফি ছিলই। এই আবহে দেদার বিকোচ্ছে ফুচকা, আইসক্রিম। একটু এগোলেই মানিকতলা ক্রশিং। সেটি পেরলেই চালতাবাগানের পুজো। সুতরাং মহালয়ার ট্রেন্ড অব্যাহত ছিল দিন–রাতের তিলোত্তমায়।
অন্যদিকে দুর্গাপুজোর আগে এটাই শেষ রবিবার। তাই শপিংয়েও ঝাঁপিয়ে পড়লেন মানুষজন। গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট, হাতিবাগান, মানিকতলা, কসবা, বেহালায় ভিড় ছিল বিপুল পরিমাণে। বিধান সরণি–বিবেকানন্দ রোডের ক্রসিং থেকে হাতিবাগান কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। কাশী বোস লেন থেকে দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারা সম্মিলনী পর্যন্ত একদিকে মণ্ডপ দেখার ভিড়, আর একদিকে শপিংয়ের ভিড়। এই দুই সাঁড়াশি চাপে তৈরি হল তীব্র যানজট। পুলিশ অনেকটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও সবটা যেন তাঁদের হাতেও ছিল না।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে আত্মহত্যা স্বামীর, প্রতিপদেই রক্তারক্তি কাণ্ড খাস কলকাতায়
আর কী জানা যাচ্ছে? যানজট এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, হাতিবাগানের রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিল পুলিশ। অনেক জায়গায় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হল। এখনই যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে ষষ্ঠী থেকে নবমী কী হবে? উঠছে প্রশ্ন। রবিবার সন্ধ্যায় ঠাসা ভিড় সামলাতে হিমশিম খেল পুলিশ। তবে ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে খবর, এখনও পর্যাপ্ত ফোর্স নামেনি। সেটি নামলে কোনও সমস্যাই হবে না। ভিড় সামলানো যাবে মসৃণভাবে। হাতিবাগান পার করতে গাড়ি চালকদের সময় লেগেছে প্রায় ৫০ মিনিট। আর বাইপাস ও ভিআইপি রোড পেরতে লেগেছে আরও বেশি সময়। তবে রবিবার পরিবেশ–পরিস্থিতি জানিয়ে দিল, দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গিয়েছে।