লোকসভা নির্বাচন এখন চলছে। তবে প্রথম দু’দফায় উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় দফায় মালদা উত্তর–দক্ষিণ, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ আসনে নির্বাচন রয়েছে। এই আবহে আবার বাংলায় চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে ‘বহিরাগত’ ইস্যু। বিজেপিকে প্রত্যেকটি নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার ‘বহিরাগত’, ‘পরিযায়ী’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে আক্রমণ করছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবকটি জনসভা থেকেই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা–সহ বিজেপি নেতাদেরকে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছেন। আজ, বুধবার বহিরগত প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘বাংলা এবং বিজেপির মানসিকতা সম্পূর্ণই আলাদা।’
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বারবার দেখা গিয়েছে, বাংলায় এসেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে তাবড় বিজেপি নেতা–মন্ত্রীদের। কিন্তু কোন কাজ বাংলার পক্ষে করেননি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। আর তাই বাংলার মানুষ সমর্থন করেনি বিজেপি নেতাদের। তখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটপ্রচারে বারবার মোদী–শাহদের আক্রমণ শানাতেন ‘বহিরাগত’ শব্দ ব্যবহার করে। বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি বোঝে না বিজেপি নেতারা। মোদী–শাহেরা বাংলায় থাকেন না। ভোটের সময় শুধু ভোট চাইতে আসে। তাই তাঁরা বহিরাগত। ভোট মিটলে তাঁদের আর বাংলায় দেখা যায় না বলেও কটাক্ষ করতেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ২০২১ সালে হারার পর আবার দেখা গেল ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময়।
ঠিক কী লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে বলে বিজেপি নেতা–মন্ত্রী এখানে আসতে শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এখানে এসে কড়া সমালোচনা করে গিয়েছেন। আর আজ, বুধবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডলে তাঁর জনসভা এবং জনসংযোগের কিছু অংশ পোস্ট করেছেন। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘বাংলা এবং বিজেপির মানসিকতায় কোনও মিল নেই। আমাদের থেকে বিজেপির মানসিকতা আলাদা। আমরা যখন আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে ধরে রাখি, কিন্তু দিল্লির পরিযায়ী পাখিরা বাংলায় মিথ্যা ছড়ানো ছাড়া কিছুই করে না। এই নির্বাচনে ওদের ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে হবে। বাংলাই পথ দেখাবে দেশকে।’
আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার থেকে ভাল বিজেপিকে ভোট দিয়ে দেওয়া’, প্রকাশ্যে বলছেন অধীর
আর কী জানা যাচ্ছে? আজ মে দিবস। তাও প্রচারে যান মুখ্যমন্ত্রী। আগামীকাল মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হবে। তারপরই ৭ মে তৃতীয় দফার ভোট। তাই আবার প্রচারে নামবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ভোট প্রচারে জনগণের গর্জন বিরোধীদের বিসর্জন স্লোগান তোলা হয়েছে। একইসঙ্গে ‘বহিরাগত’ শব্দের ব্যবহার হচ্ছে। দার্জিলিংয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তাকে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ করা হয়েছে। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রার্থী ইউসুফ পাঠান এবং কীর্তি আজাদকেও বহিরাগত বলে নিশানা করছে বিজেপিও।