ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বাংলার ডেঙ্গি পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ৫০ হাজারের বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন এই মরশুমে। মারা গিয়েছেন ৭০ জন। কলকাতাতেও পরিস্থিতি বেশ খারাপ। এই আবহে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সাফাই, ‘স্বচ্ছ জলের সরবরাহ বৃদ্ধির কারণেই ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে।’ এদিকে মেয়রের পরামর্শ, ‘ডাক্তার দেখিয়ে প্লেটলেট পরীক্ষা করান। প্লেটলেট যদি ঠিক থাকে, তাহলে ডেঙ্গির কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা খুব কম।’
শুক্রবার ‘টুক টু মেয়র’-এ সাংবাদিক বৈঠকের সময় ফিরহাদ বলেন, ‘মৃত্যু এবং জীবন আমাদের হাতে নয়। ডেঙ্গিতে মূলত প্লেটলট কমে যায় এবং ডিহাইড্রেশন হয়। আমার বাড়িতেও পরিবার সদস্যের ডেঙ্গি হয়েছিল। প্রথম থেকেই যদি ডেঙ্গি আক্রান্তকে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ানো যায় এবং প্লেটলেট যদি দেওয়া যায়, তাহলে ডেঙ্গি মারণ আকার ধারণ করার ক্ষমতা খুব কমে যায়।’
এদিকে মেয়র দাবি করেন, কেরলে, উত্তর প্রদেশে, ত্রিপুরাতেও অনেক ডেঙ্গি হয়েছে। এরপর তিনি বলেন, ‘মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে যেখানে যে সরকারই থাকুক না কেন ডেঙ্গি কমানো সম্ভব নয়। দিল্লি যে গাইডলাইন দেয়, সেটা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন দেয়। সেটা দেখেই চিকিৎসকদের পরামর্শ দেওয়া হয়।’
এদিকে গতকালই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান বেলাঘাটা আইডি হাসপাতালের সহকারী সুপার অনির্বাণ হাজরা। এ বছর রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড হারে বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৫৭ জন। গত এক সপ্তাহেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩৯৬ জন। সংক্রমণের হার ১২.৭ শতাংশ। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদের। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর প্রশাসন ছুটি কাটাচ্ছেন। দুয়ারে সরকারের নামে পঞ্চায়েতের ভোট প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অসত্য কথা বলছেন।’ এই আবহে ডেঙ্গি নিয়ে বঙ্গে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।