কলকাতার প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্তের দেহ সৎকারে চরম সতর্কতা নিতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ওই দেহ থেকে যেন কেউ সংক্রমিত না হন তা নিশ্চিত করতে WHO-র নির্দেশিকা মেনে চলা হবে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর। সোমবার দুপুরে বিধাননগরের বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় দমদমের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়ের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চাইলে প্রৌঢ়ের দেহ দেখতে পাবেন পরিজনরা। তবে তা ছুঁতে পারবেন না তাঁরা।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, WHO-র নির্দেশিকা অনুসারে করোনায় মৃতের দেহ সৎকার করবে সরকার। সেজন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত কর্মীদের সাহায্য নেওয়া হবে। মৃতদেহ হাসপাতালের শয্যা থেকে সরানোর আগে ভাল করে বন্ধ করতে হবে চোখ, মুখ, নাক ও কান। কারণ মানুষের দেহ থেকে বেরোনো অতি ক্ষুদ্র জলবিন্দু থেকেই ছড়ায় করোনাভাইরাস। মানুষের দেহের এই ছিদ্রগুলি থেকেই সেই জলবিন্দু ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
এর পর মৃতের দেহ থেকে সাবধানে খুলে ফেলতে হবে সব নল। হাইপোক্লোরাইড (ব্লিচিং পাউডারের মতো পদার্থ যা থেকে ক্লোরিন বেরোতে থাকে) দিয়ে বন্ধ করতে হবে নল লাগানোর ছিদ্রগুলি। এর পর দেহের ওপর ছড়ানো হবে জীবাণুনাশক।
এর পর জীবাণুনাশক ব্যাগে ভরে দেহ খুব সাবধানে বার করতে হবে হাসপাতাল থেকে। যাঁরা দেহ বার করবেন বা স্পর্শ করবেন তাঁদের পরতে হবে জল নিরোধন অ্যাপ্রন, গ্লাভস ও N95 মাস্ক।
শ্মশানে দেহ সোজা ঢুকিয়ে দিতে হবে বৈদ্যুতিন চুল্লিতে। পরিজনরা দেহ দেখতে চাইলে তা দেখানো যেতে পারে। তবে কোনও পরিস্থিতিতেই দেহ ছোঁয়া যাবে না। দেহ দেখার পর স্যানিটাইজেশনের যাবতীয় প্রক্রিয়া মানতে হবে।
দেহ সৎকারের পর পরিজনরা চিতাভস্ম সংগ্রহ করতে পারেন। তা দিয়ে মৃতের পারলৌকিক ক্রিয়া করতে পারেন তাঁরা।
দেহ সরিয়ে নেওয়ার পর হাসপাতালের যে কক্ষে রোগী ছিলেন তার দেওয়া থেকে শুরু করে সব কিছু হাইপোক্লোরাইড দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। রোগীর ব্যবহার করা যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রী, যেমন, নল, তুলো নিয়ম মেনে নষ্ট করতে হবে।