রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তা নিয়ে সংঘাত চরমে উঠেছে রাজভবন এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে। রাজভবনের পক্ষ থেকে যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে সেটা ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের। আর তাতে দেখা গিয়েছে, ওই যুবতী হেঁটে যাচ্ছিলেন। আজ, শুক্রবার পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের হাতে একটি সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। যেখানে যুবতী কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছেন। এই বিতর্কের মধ্যেই বিস্ফোরক দাবি করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ করেন করিডোরের ভিডিয়ো দেখানোর। যৌন নির্যাতনের অভিযোগে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই যুবতী। রাজভবনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ফুটেজে রাজ্যপালের চেম্বারের ছবি দেখানো হয়নি।
এদিকে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ ইস্যুতে আজ, শুক্রবার সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনের দিকে আঙুল তুলে অভিষেক বলেন, ‘ওই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে নির্যাতিতা মহিলাকে আরও বেশি করে অপমান করা হয়েছে। ক্ষমতা থাকলে করিডরের ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন। ওঁর এত ভয় কেন? আপনার চেম্বার থেকে যখন অভিযোগকারিণী বেরোচ্ছেন, ক্ষমতা থাকলে সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করুন। বাইরের ফুটেজ দেখিয়ে কী হবে? ক্ষমতা থাকলে রাজ্যপাল তাঁর করিডর, চেম্বারের ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন। সেখানে উনি মেয়ের বয়সি মেয়ের সঙ্গে কী আচরণ করেছিলেন? তাহলেই তো সবটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে রামনবমীর মিছিলে বোমাবাজি, এনআইএ’কে তদন্তভার দিল কলকাতা হাইকোর্ট
অন্যদিকে আজ শুক্রবার ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক আলিপুর ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন জমা দেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, আর আমি যদি সেটা খারিজ করতে ভিডিয়ো দেখাই, তা হলে তো সমস্ত ফুটেজই দেখাব। চেম্বার, সিঁড়ি, করিডর—সব জায়গার ভিডিয়ো দেখাবো। কিন্তু রাজ্যপাল শুধু বাইরের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছেন। এটা তো পুরো নাটক। আপনি সংবাদমাধ্যমের কয়েকজন প্রতিনিধিকে বেছে নিয়েই দেখান। তৃণমূলকে দেখাতে হবে না। আইনি পথে আপনার বিরুদ্ধে কিছু করা যায় না বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন? আপনি আইনের ঊর্ধ্বে? আপনার মেয়ের থেকেও ছোট, এতটা নিষ্কৃষ্ট। এঁদের বিরুদ্ধে যত কম বলা যায়, তত ভাল।’
এছাড়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এই ইস্যুতে পুলিশের তদন্ত যাতে না হয় তার জন্য রাজ্যপালের সাংবিধানিক অধিকার স্মরণ করিয়ে মুখ্যসচিবকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনখড়কে দেখেছিলাম। কিন্তু নিজের মেয়ের বয়সি মেয়েকে চাকরির টোপ দিয়ে শ্লীলতাহানি করছেন! এত নীচে কোনও রাজ্যপালকে নামতে দেখিনি। আইনি পথেই এর বিচার জরুরি। আমি মনে করি রাজ্য সরকারের উচিত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া। অন্যায় করে থাকলে আপনি তা স্বীকার করে ক্ষমা চান। তাতে কেউ ছোট বড় হয়ে যায় না। এত ঔধত্য কেন? জাতীয় মহিলা কমিশন ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও মেয়েটির খোঁজটুকু নেয়নি। ওরা বিজেপি কমিশন অফ ওম্যান হয়েছে।’