পুজো মানেই মণ্ডপে, রাস্তাঘাটে এবং খাবারের দোকানে মানুষের ভিড়। আর ভিড় হলে স্বাভাবিকভাবেই আবর্জনা বৃদ্ধি পায়। সেই কারণে এবার কলকাতায় পুজোর সময় বর্জ্য প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মহালয়া থেকে দশমী পর্যন্ত ১১ দিনে কলকাতা থেকে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত জঞ্জাল সংগ্রহ হয়েছে। ধাপায় এমনিতেই বর্জ্য ধারণের যে ক্ষমতা রয়েছে তার চেয়ে বেশি বর্জ্য জমে রয়েছে। তার উপর পুজোয় অতিরিক্ত ৫০ হাজার টন বর্জ্য জমায় সেগুলি প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে চিন্তিত পুরসভার অধিকারকারা।
আরও পড়ুন: ‘ধাপার জমি জবরদখল করা যাবে না’, কড়া হুঁশিয়ারি ফিরহাদ হাকিমের
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত কলকাতায় প্রতিদিন ৩৮০০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এই বর্জ্য প্রতিদিন ধাপায় ফেলে আসেন পুরসভার কর্মীরা। তবে পুজোয় বর্জ্যের পরিমাণ যেভাবে বেড়েছে তাতে মাথায় হাত পুরসভা কর্তৃপক্ষের। পুর আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, মূলত এই সমস্ত বর্জ্য পুজোয় খাবারের দোকানগুলিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। পুজোর সময় রাস্তায় দেদার খাওয়া দাওয়া চলে। স্থায়ী দোকান তো বটেই,বরাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে প্রচুর দোকান বসে। তাতে মানুষের ভিড় থাকে। পুজোর এই কয়েকটা দিন বাইরে থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতায় আসেন। যার ফলে রাস্তাঘাটে অতিরিক্ত আবর্জনা জমে। যদিও পুজোর সময় আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য প্রত্যেকবারের মতো এবারও অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন ছিল কলকাতা পুরসভার। প্রতিদিন নিয়মিত দুবার করে পরিষ্কার করা হয়েছে শহরের রাস্তাঘাট। তাছাড়া মণ্ডপ চত্বরগুলিতেও রাখা হয়েছিল সাফাই কর্মী। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর এই কয়েকটা দিন প্রতিদিন ৪,৫০০ মেট্রিক টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ১৮ শতাংশ বেশি। সেই হিসেবে মহালয়া থেকে দশমী পর্যন্ত ৪৯,৫০০ মেট্রিক টন অতিরিক্ত বর্জ্য সংগ্রহ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শহরে আগেই বর্জ্যকে উৎসে পৃথকীকরণের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেক্ষেত্রে পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য আলাদা বালতিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণযোগ্য বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য একটি ইউনিট ধাপায় চালু হয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে সব অপচনশীল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব হচ্ছে না বলে পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরসভার আধিকারিকদের মতে, ধাপায় পচনশীল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করে সার এবং বায়ো গ্যাস তৈরি করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে জঞ্জাল অনেকটাই কমিয়ে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু পুজোয় এত পরিমাণ বর্জ্য জমার ফলে সেগুলি প্রক্রিয়াকরণে কত সময় লাগবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আধিকারিকরা।