যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়ে টানাপোড়েন দেখেছেন অধ্যাপক থেকে পড়ুয়া। এই অবস্থায় একবার উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে বরখাস্ত করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আবার তৎক্ষণাৎ তাঁকেই উপাচার্য করে পাল্টা রাজ্যপালকে বার্তা দেয় রাজ্য সরকার। এই যে দু’পক্ষের লড়াই তার মাঝে পড়ে গিয়েছেন বুদ্ধদেব সাউ। আর এই মধ্যবর্তী অবস্থানে পড়ে নিজেকে পিংপং বল বলে মনে করছেন তিনি। এমন আবহে কাজ করা যায় না বলেও মনে করেন বুদ্ধদেব। তাই রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতকে নিশানা করলেন তিনি।
এবার পিংপং বলের অবস্থায় থাকা নিয়ে মুখ খুললেন বুদ্ধদেব সাউ।। তবে এই উপাচার্য নিশানা করেছেন জুটাকেও। বুদ্ধদেব সাউয়ের কথায়, ‘পিংপং বলের মতো অবস্থায় কাজ করা যায় না। আজ রাজ্য সরকারের চিঠি আসছে, তো কাল রাজ্যপালের চিঠি আসছে।’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগের রাতে আচার্য সিভি আনন্দ বোস অপসারণ করেন বুদ্ধদেব সাউকে। আচার্য আনন্দ বোসের নির্দেশ অমান্য করে সমাবর্তন করছিলেন তিনি বলে অভিযোগ। এই সমাবর্তনের জন্য বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও। তার জেরেই কোপ পড়ে উপাচার্যের উপর। যদিও তাঁকেই বহাল করে শিক্ষা দফতর।
এদিকে এখন উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। চার মাস কাজের পর উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে অপসারিত করেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। সংঘাতের লড়াইতে পড়ে তাঁর এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই বুদ্ধদেব সাউকে নিয়োগ করেছিলেন খোদ রাজ্যপাল। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে বুদ্ধদেব সাউ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং চ্যান্সেলারকে যে ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে, তার বাইরের সমস্ত ক্ষমতা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসনের মধ্যে পড়ে। এখন যদি বাইরে থেকে কোনও ক্ষমতা কেউ দেখান তাহলে তা বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা তৈরি করবে।’ উপাচার্য না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে অসুবিধা হবেই বলে তাঁর মত।
আরও পড়ুন: ‘জিনা হারাম করে দেব’, প্রকাশ্য সভা থেকে আইএসএফ’কে হুঁশিয়ারি তৃণমূল বিধায়কের
অন্যদিকে সংগঠন জুটাকেও তুলোধনা করেন বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর বক্তব্য, ‘ওরা প্রথম থেকেই আমার পিছনে লেগেছিল। ওরা চেয়েছিল ওদের পছন্দের উপাচার্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগের পিএইচডিতে দুর্নীতি, রিজার্ভেশনে দুর্নীতি হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে জুটা চুপ কেন?’ তবে বুদ্ধদেব সাউয়ের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে জুটাও। জুটার সভাপতি পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেছেন, ‘উপাচার্য নিজের বোধ–বুদ্ধি থাকা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারের শাসক বা রাজ্যের শাসক তাদের কথায় হ্যাঁ–না করব। তাদের সুরে সুর মিলিয়ে চলব। এই সব করলে তো পিংপং বল হবেনই।’