মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই–এর অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা থেকে এক সাইবার প্রতারককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা দানিশ আহমেদ নামে ধৃত ওই যুবক ভুয়ো কল সেন্টারের মাধ্যমে মূলত মার্কিন নাগরিকদের প্রতারণা করত। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে তিন বছর ধরে আমেরিকার বাল্টিমোরের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে ওই যুবক।
আরও পড়ুন: ৩ মার্কিন নাগরিককে প্রতারণা, FBI ও ফেসবুকের সহায়তায় কলকাতা থেকে ধৃত ২
ধৃতের কাছ নগদ ৪.৯ লক্ষ টাকা এবং ১৩ টি ব্র্যান্ডেড বহুমূল্য ঘড়ি তার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, এই সমস্ত ঘড়ি প্রতারণা টাকা দিয়ে কিনেছিল দানিশ। শুধু তাই নয়, দামি গাড়িও কিনে ফেলেছিল ওই যুবক। ডিসি (সাইবার) অতুল ভি বলেছেন, ধৃতের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত ঘড়িগুলি প্রতারণার টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই টাকা দিয়েই একটি গাড়িও কিনেছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন বছর ধরে মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে ওই যুবক। ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেখানে এক নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা করে। এরপর আরও অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। নিজেকে বহুজাতিক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে যুবক। পাঁচজনেরও বেশি মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল ওই যুবক। পুলিশের অনুমান, প্রতারণার সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবক প্রথমে ফোনে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। এরপর তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। প্রতারিত মার্কিন নাগরিকরা এবিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কাছে। এরপর এফবিআই জানতে পারে কলকাতা থেকে প্রতারণা হয়েছে। এরপর কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এফবিআই। এরপর আইপি অ্যাডরেসের সূত্র ধরে প্রতারককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ক্রিপ্টো কারেন্সি প্রতারণাতেও ওই যুবকের নাম থাকতে পারে। এছাড়া এই প্রতারণার সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত থাকতে পারে। সম্প্রতি বেনিয়াপুকুর থেকে সিজান আলি হায়দার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা সাইবার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ৭১ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। তার সঙ্গে দানিশের যোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ভুয়ো কলসেন্টারের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদেরই বেশি টার্গেট করছে প্রতারকরা।