মাসখানেক আগে এক মার্কিন নাগরিককে প্রতারণার অভিযোগে এন্টালি থেকে কয়েকজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ধৃতেরা শুধু একজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গেই প্রতারণা করেনি, আরও বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। সব মিলিয়ে এই গ্যাংয়ের কাছে প্রতারিত হয়েছিলেন তিনজন মার্কিন নাগরিক। তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল এই গ্যাং। প্রতারিত হওয়া তিন মার্কিন নাগরিকের নাম নিউ জার্সির জর্ডান এস হেন্ডিন, র্যান্ডাল উইনস্টন এবং লস এঞ্জেলেসের ল্যারি ব্রানম্যান।
আরও পড়ুন:টেক সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে বেলজিয়ামের নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা, ধৃত ৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এফবিআইয়ের পাশাপাশি ফেসবুকের মালিকানাধীন সংস্থা মেটা ইনক কলকাতা পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করেছে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ফারদিন হোসেন এবং ফারহান খানকে ফেসবুকের সূত্র ধরেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রতারকরা ফেসবুকে একটি গ্রুপ চালাত। তবে সেই গ্রুপটি পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই গ্রুপে একজন সদস্য নিজেকে ‘কলার’ হিসেবে পরিচয় দেয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মূলত যে প্রতারক কোনও ব্যক্তিকে টাকা স্থানান্তরিত করতে বাধ্য করে মূলত তাকেই কলার বলা হয়।
পুলিশ জানতে পারে, আরও এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করেছিল ধৃতেরা। ওই নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানোর চেষ্টা করা হয়েছিল ৯ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। যদিও প্রতারকরা তাতে ব্যর্থ হয়েছিল। পরে এফবিআই বাকিদের নাম জানতে পারে এবং তারা কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এদিকে, ধৃতদের বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তাদের আদালতে পেশ করা হলে ২৮ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, সাইবার প্রতারণার জন্য প্রতারকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টার্গেট করছে বিদেশি নাগরিকদের। বিশেষ করে মার্কিন নাগরিকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে করা হচ্ছে সাইবার প্রতারণা। মূলত টেক সাপোর্টের নামেই বেশি প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। এরকমই ভুয়ো কলসেন্টারের সাহায্যে প্রতারণার ঘটনায় সম্প্রতি আত্মঘাতী হয়েছেন তিন মার্কিন নাগরিক। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই মামলার বিচার এখনও চলছে।