সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের আয় বৃদ্ধির জন্য নতুন প্রকল্প চালু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাসপাতালের আয়ের একাংশ দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকদের। একেবারে কর্পোরেট ধাঁচে এই এই প্রকল্প চালু হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল এবং চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার হাসপাতালে। এই হাসপাতালগুলিতে যে সমস্ত প্রাইভেট বেড রয়েছে তা থেকে আয়ের একাংশ চিকিৎসকদের দেওয়া হচ্ছে। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের শোষণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির, চিকিৎসা করালেন প্রায় ২ হাজার মানুষ
চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের রাজারহাট এবং হাজরা ক্যাম্পাসে ৪০০ টি বেড রয়েছে। যার মধ্যে ১০০টি প্রাইভেট শয্যা রয়েছে। এই সমস্ত প্রাইভেট বেড়ে রোগীদের কর্পোরেট ধাঁচে চিকিৎসা করা হয়। যার ফলে রোগীদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আবার এসএসকেএম হাসপাতালেও রয়েছে প্রাইভেট কেবিন। যেখানে টাকা দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করতে হয়। তা থেকে হাসপাতালের যে লাভ হচ্ছে তার একাংশ দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকদের। চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে যে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে তার নাম হল শেয়ার অফ হসপিটাল ইনকাম স্কিম। এর মাধ্যমে কোনও চিকিৎসকরা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। এই শয্যা থেকে যা আয় হচ্ছে তা অর্ধেক থেকে যাচ্ছে হাসপাতালের কাছে এবং বাকি এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের মধ্যে বন্টন করা হচ্ছে।
যদিও চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের এক আধিকারিকের মতে আগামী দিনে অন্যান্য হাসপাতালগুলিতে এই প্রকল্প চালু হবে। তবে এ বিষয়ে একমত নন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তিনি বলেন, এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে যে সমস্ত পেয়িং কেবিন রয়েছে সেখানকার লাভের কিছু অংশ চিকিৎসকরা পান। তবে সমস্ত হাসপাতালে চালু হবে কিনা তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের ২৬ জন চিকিৎসক এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে বিরোধিতা করা চিকিৎসকদের অভিযোগ, কর্পোরেট চিকিৎসার নামে রোগীদের শোষণ করা হচ্ছে। অকারণে একই পরীক্ষা রোগীদের বারবার করে টাকা শোষণ করা হচ্ছে। ডাক্তারদের ফি বাড়ানো হচ্ছে। মাসে ৯০ থেকে ৯৪ হাজার টাকা লভ্যাংশ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ বিরোধিতা করা চিকিৎসকদের।
তাঁদের মতে, সরকারি হাসপাতাল অতিরিক্ত লাভ করার জায়গা নয়। অথচ সেখানে রোগীদের শোষণ করা হচ্ছে। যেটা মোটেই ঠিক নয়। যদিও চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের এক আধিকারিকের মতে, কখনই অপ্রয়োজনীয় ভাবে বিল বাড়ানো হয় না। ১০০ শয্যা থেকে যে আয় হয় তার বেশিরভাগটাই বাকি ৩০০ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যয় হয়. বরঞ্চ এই প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসকদের যে খরচ দেওয়া হয় তা বেঁচে যায়।