সাম্প্রতিক সময়ে মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলায় গঙ্গা ভাঙন একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমি, ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গাবক্ষে। প্রতিবছর গঙ্গা ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সর্বস্ব হারাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। অথচ রাজ্য বা কেন্দ্রের তরফে স্থায়ীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তার জেরে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে হাজার হাজার হাজার মানুষকে। এই অবস্থায় হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে গঙ্গা ভাঙন, মামলা জাতীয় পরিবেশ আদালতে
কলকাতা হাইকোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন মুর্শিদাবাদের সুতির বাসিন্দা মাসুদ শেখ। তিনি নিজেও কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, গঙ্গা ভাঙন মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জের একাধিক জায়গায় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর গঙ্গা ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। কয়েক বছর ধরে বহু বাড়িঘর বিলীন হয়ে গিয়েছে গঙ্গা ভাঙনের কবলে। বিলীন হয়ে গিয়েছে হাজার হাজার কৃষি জমিও। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের তরফ থেকে শুধুমাত্র অস্থায়ী প্রতিরোধে বালির বস্তা দেওয়া হচ্ছে। স্থায়ী সমাধান করার কোনওরকম ব্যবস্থা করছে না কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার। পাথর দিয়ে পাড় বাঁধানো হচ্ছে না। সবকিছুকে সামনে রেখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তিনি।
মাসুদ জানান, এর আগে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্থায়ী সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? তা নিয়ে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও উত্তর না পাওয়ায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন আগেই তিনি সামসেরগঞ্জের গঙ্গা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এলাকা পরিদর্শন করার পাশাপাশি গঙ্গা ভাঙনে সর্বহারা মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আশ্বাস দেন তিনি জনস্বার্থ মামলা করে তাদের হয়ে লড়বেন। আগামী ১৬ অক্টোবর এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম জনস্বার্থ মামলা হওয়ায় খুশি গঙ্গাভাঙন এলাকার সর্বহারা মানুষরা। তাঁদের আশা এবার হয়ত তাঁরা গঙ্গা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। উল্লেখ্য, গঙ্গা ভাঙন নিয়ে এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছ সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ তুলছে বহু বার।