হাতে আর সময় বেশি নেই। তিন দিনের মাথায় শুরু হয়ে যাবে রাজ্যজুড়ে বাগদেবীর আরাধনা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ছোঁয়া পাওয়া যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে একটা ব্যতিক্রম দেখা যাবে এবার। সরস্বতী পুজোয় কলেজ ছাত্রীদের পুরোহিতের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বারবার। সেখানে এবার স্কুলের ছাত্রীদের সরস্বতী পুজোয় পুরোহিতের ভূমিকায় দেখা যাবে বলেই খবর। শুধু তাই নয়, যজ্ঞও করবে তারা। এই ছাত্রীদের সরস্বতী পুজোর কাজ শেখাচ্ছেন তাদেরই স্কুল থেকে সদ্য পাশ করা এক প্রাক্তন ছাত্র। সুতরাং এটাই ব্যতিক্রমের মধ্যে অভিনবত্ব।
এদিকে ছাত্রীদের পুরোহিতের ভূমিকায় দেখতে সবাই মুখিয়ে আছেন। এমন ব্যতিক্রম অভিনব দৃশ্য দেখা যাবে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘দশম শ্রেণির তিনজন এবং নবম শ্রেণির চারজন ছাত্রী এবার সরস্বতী পুজোর সব আচারের ভার নিজেদের কাঁধে নিয়েছে। তবে দশম শ্রেণির তিনজন ছাত্রী পুরোহিতের ভূমিকায় পুজো করবে। আর নবম শ্রেণির চারজন ছাত্রী এখানে যজ্ঞ করবে। আমাদের স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র দীপ্তিমান ঘোষ এই বাড়িতে সরস্বতী পুজো করে। ওই সাতজন ছাত্রীকে মন্ত্র পাঠ–সহ পুজো করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।’
অন্যদিকে এই কাজকে সুচারুভাবে তুলে ধরতে দীপ্তিমান সাতজন ছাত্রীকে সরস্বতী পুজোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ২০২৩ সালে ওই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এখন এক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র দীপ্তিমান। এই বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে দীপ্তিমান বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পুজো হয়। বাবার কাছ থেকে আমি সরস্বতী পুজো করতে শিখেছি। পড়াশোনা করার সঙ্গে পুরোহিতের কাজ করতে ভালই লাগে। এবার কয়েকদিন আগে স্কুলে এসেছিলাম। তখনই স্যারেরা আমাকে প্রস্তাব দিলেন যে, আমি কয়েকজন ছাত্রীকে সরস্বতী পুজো করা শেখাতে পারব কি না। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তারপরই পুরোহিতের কাজ ওরা শিখে নিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: মাছের ভেড়ি বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ, পুলিশকে ফোন করলেন মেয়র
এছাড়া এই কাজ করে বিদ্যালয়ে একটা ইতিহাস তৈরি করতে চাইছেন ছাত্রীরা। প্রত্যেক বছর এমন কাজ হলে তা ছাত্রীদের জন্য ভালই হবে। স্কুলেরও ভাল হবে। কারণ দশম শ্রেণিতে পড়া মানে পরের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই সরস্বতী পুজো করে নিজেদের পড়াশোনা সম্পর্কে প্রার্থনা করতে পারবে। এই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রীর কথায়, ‘আমরা মেয়েরা সরস্বতী পুজোর আয়োজন করলেও দেখতাম, স্কুলে মূল পুজোর পুরোহিতের কাজ ছেলেরাই করছে। পাড়ার সরস্বতী পুজোতেও পুরোহিত পুরুষরাই হন। এবার আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা হবে। পুরোহিতের ভূমিকায় আমি কেমন মন্ত্রপাঠ করব সেটা শুনতে আমার বাড়ির সদস্যরাও আসবেন। আমরা পৌরোহিত্য এবং যজ্ঞ করার দায়িত্ব পেয়েছি।’