লকডাউনে জেরে ঘরবন্দি জীবনে বাড়ি থেকে বেরনোর একমাত্র উপায় বাজারে যাওয়া। আর বাজার পাগল বাঙালির তাই লকডাউনে যেন শাপে বর হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাজারে গিয়ে একটা একটা করে আলু – পটল টিপে টিপে কিনছে তারা। আর তার জেরেই বাজারে বাড়ছে ভিড়। যার জেরে বন্ধ করে দিতে হল বাগুইআটি এলাকার ২টি বাজার। শুক্রবার থেকে বন্ধ রয়েছে জ্যোতিনগর ও জগৎপুর বাজার। বাজার কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, অনেক বুঝিয়েও ক্রেতাদের সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের গুরুত্ব। অগত্যা...
বৃহস্পতিবার জগৎপুর বাজারে উপচে পড়ে ভিড়। অবস্থা দেখে বৈঠকে বসে বাজার সমিতি। সিদ্ধান্ত হয় এদিন থেকেই ৪ দিন বন্ধ থাকবে বাজার। জগৎপুর বাজার বন্ধ হওয়ায় কাছেই জ্যোতিনগর বাজারে যেতে শুরু করে মানুষজন। সেখানেও একই পরিস্থিতি হয়। ফলে সেখানে ৫ দিনের জন্য বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাজার সমিতি।
জগৎপুর বাজার সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা ভাবে স্থানীয়দের বাজারে ভিড় করার বিপদ বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই ভিড় কমছে না। তাই বাজার বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। মানুষ না বুঝলে ফের বাজার বন্ধ করতে হবে। নইলে এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর গুরুতর সম্ভাবনা।
শুক্রবার সকালে জ্যোতিনগর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শুনশান গোটা বাজার। বন্ধ ছোট বড় সব দোকান। ব্যারিকেডিং করে পথচারীদের পরীক্ষা করছেন পুলিশ কর্মীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেই বাজার করা সম্ভ্রান্ত বাঙালির অন্যতম রাজকীয় শখ। তার ওপরে হাতে অঢেল সময়। কাঁচা সবজির দামও কম। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেনাকাটা করছেন অনেকে। যে জিনিস ১০ মিনিটে কিনে ফেলা যায় তা কিনতে কাটিয়ে ফেলছেন কয়েক ঘণ্টা। তাছাড়া বাজার ছাড়া এখন বাড়ি থেকে বেরনোরও উপায় নেই। ফলে রাজ্যের ছোট বড় সব বাজারেই একই পরিস্থিতি। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না যে এর ফলে তাদের কী বিপদ হতে পারে। একবার এলাকায় সংক্রমণ ছড়ালে অবশিষ্ট এই স্বাধীনতাটুকুও হারাবেন তাঁরা। এলাকা সিল হলে যাবতীয় রসদের জন্য ভরসা করতে হবে প্রশাসনের ওপর। আর তখন তাঁরা যেটুকু দেবেন কাজ চালাতে হবে তাতেই। মাথায় উঠবে রোজ পঞ্চব্যঞ্জন প্যাঁদানো।