কেন্দ্রীয় প্রকল্প বনাম রাজ্যের প্রকল্প নিয়ে রেষারেষি দেখেছে বাংলা। এমনকী কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিরোধিতা করে রাজ্যে তা চালু করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। আবার তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রের পিএম কিষান বা আয়ুষ্মান ভারতের মতো একই প্রকল্প তো রাজ্য সরকারই চালু করেছে। তা হলে আর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার দরকার কী! তাছাড়া রাজ্যের প্রকল্পেই মানুষ বেশি উপকৃত। বরং কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলাকে বঞ্চিত করেছে।
এবার হ্যাট্রিক করে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তারপরই ‘দুয়ারে সরকার’–এর মাধ্যমে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড–সহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে রাজ্য সরকার প্রচণ্ড আর্থিক চাপে বেড়েছে। এই প্রকল্পগুলি চালু করে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে কোষাগারে চাপও অনেকটা বেড়েছে। এখন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করে চালু প্রকল্পগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে সরকার বলে সূত্রের খবর।
কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে তো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোন পথে হাঁটবে তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে খোঁজখবর করতে বলা হয়েছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের পিএম কিষান প্রকল্পে সায় দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে রাজ্য কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করেছে। কেন্দ্রের ফসল বিমা যোজনার পরিবর্তে রাজ্য সরকার কৃষকদের শস্য বিমার ব্যবস্থা করেছে। এখনও কেন্দ্রের ফর্মালাইজ়েশন অব মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইজেস প্রকল্পে সায় দেয়নি রাজ্য। কিছু প্রকল্পে কেন্দ্রের অংশীদারি থাকলেও রাজ্যের বরাদ্দ বেশি থাকায় সেই প্রকল্পের নতুন নামকরণও হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘নবান্নই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যেসব প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অংশীদারি পাওয়া সম্ভব, তা অবহেলা করার কোনও যুক্তি নেই। কেন্দ্র তো নিজেরা টাকা দেয় না! রাজ্যগুলির কাছ থেকে কর বাবদ তারা যে অর্থ আদায় করে, তারই ভাগ দেয়।’