একদিকে ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অপরদিকে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা। এই দুটি বিষয় একদিনে পড়ে যাওয়ায় তা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দুটি বিষয় একইদিনে ঘটলেও কোনও সমস্যা হবে না। তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। আজ, সোমবার এই বিষয়টি নিয়ে আশ্বস্ত করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আগামী ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে গীতা পাঠ। সেখানে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেদিনই শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা। এমন আবহে বিজেপি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে বসে আছে।
বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ এই মামলা করেছেন। যাতে টেট পিছিয়ে যায়। টেট পিছিয়ে গেলে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করা যাবে। আর টেট পরীক্ষা হয়ে চাকরি পেলে সেটা রাজ্য সরকারের সাফল্য। তাই রাজনীতি শুরু। তবে আজ বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘টেট নিয়ে পর্ষদের সঙ্গে কথা বলেছি। পর্ষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রশাসনও সতর্ক আছে। জেলাশাসকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ভার্চুয়ালি কথা বলেছে পর্ষদ। তাই কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশা করছি।‘ টেট পরীক্ষার দিন বদল করে পর্ষদ ৪ তারিখ থেকে ২৪ ডিসেম্বর উল্লেখ করে জারি করেছে বিজ্ঞপ্তি।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে টেট পরীক্ষার দিন পরিবর্তন হতেই এই ইস্যু নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তবে আজ সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। যদিও তা হয়নি। এই পরীক্ষা অন্য তারিখে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। দিলীপ ঘোষের যুক্তি, একই দিনে ব্রিগেডে গীতা পাঠ এবং টেট পরীক্ষা হলে রাস্তায় মারাত্মক যানজট তৈরি হতে পারে। তার জেরে বিপাকে পড়বেন পরীক্ষার্থীরা। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে তাঁকে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে, গীতা পাঠ কি রাজনৈতিক কর্মসূচি? সেটা যদি না হয় তাহলে এটাকে নিয়ে কেন বিজেপি জলঘোলা করছে?
অন্যদিকে এই টেট পরীক্ষা হয়ে ফল বেরিয়ে যুবক–যুবতীরা চাকরি পেলে সেটা হবে লোকসভা নির্বচনের আগে মাস্টারস্ট্রোক। আর এটাই আটকাতে চাইছে বিজেপি বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবারের টেট পরীক্ষার পূর্ণ মান থাকছে ১৫০। যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। কর্মসংস্থানের যখন দিশা খুলছে তখন তা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না বলেই পরীক্ষার্থীদের মত। ইতিমধ্যেই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেখানে এমন সুযোগকে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজে লাগাতে চাইছে পর্ষদ। আর তাতে বাগড়া দিতে চাইছে বিজেপি। এই নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি।