পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা গিয়েছে গ্রামবাংলার বহু জায়গায় নির্দল প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। সেটা শাসক শিবিরেও আছে। বিরোধী শিবিরেও আছে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুইপ জারি করেছিলেন, পার্টির গাইডলাইন না মেনে যাঁরা নির্দল হয়ে প্রার্থী হচ্ছেন, তাঁরা জিতলেও দলের দরজা চিরতরে বন্ধ থাকবে। আর ফেরানো হবে না। কিন্তু ফলাফলের পর দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায় নির্দল প্রার্থীরাই কিংমেকার। তাই বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান ঠিক কী? এখন বহু জেলায় ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত গঠন হয়েছে। তাই একটা বিকল্প পথ ভাবা হয়েছে। যা নিয়ে বিরোধীরা সোচ্চার হচ্ছেন বিভিন্ন সময়ে। এই নির্দল প্রার্থী যিনি জয়ী হয়েছেন তাঁকে দলে নেওয়া হবে না। অথচ তাঁর সমর্থনে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করা হবে। তাহলে একদিকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হুইপ মান্যতা পেল। অন্যদিকে নির্দলদের সমর্থন নিয়ে পঞ্চায়েত বোর্ডও গঠন করা গেল। এখন এমন নীতি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে আর একটি বিষয়—দল ভাঙানোর অভিযোগও করতে পারবেন না বিরোধীরা।
এদিকে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ নানা প্রান্তে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে একাধিক জায়গায় অসুবিধায় পড়তে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। আবার নানা জায়গায় নির্দলের সমর্থনে বোর্ড গঠনও করতে হয়েছে। এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ‘সেনাপতির’ ঘোষিত নিষেধও মানার বিষয় আছে। তাই কী করা যায়? তখন এই বিকল্প পথ ঠিক করা হয়। আর সেই মতো কাজ করা হচ্ছে। যদিও এটাকে দলীয় অবস্থান বলতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। এই গোটা বিষয়টিকেও নির্দলদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আর সামনে নিয়ে আসা হয়েছে ‘বিবেকের টান’।
আরও পড়ুন: টানা তিনদিন বাংলায় থাকবেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, যাবেন দক্ষিণেশ্বরেও
বিবেকের টান বিষয়টি ঠিক কী? অন্যদিকে জয়ী নির্দলদের ‘বিবেকের টান’ বিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘এতে দলে ফেরানোর কী আছে? কেউ যদি বিবেকের টানে আমাদের সমর্থন দেন সেটা তাঁদের ব্যাপার। নির্দল হলেও ওনারা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি আদর্শেই চলেছেন। যদি কেউ দেখেন, ওনারা সমর্থন দিলে বোর্ডটা বিরোধীদের হাতে চলে যাচ্ছে, সেটা তাঁরা মেনে নিতে নাই পারেন। তখন তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করতেই পারেন। সেটা তাঁরা বিবেকের টানে করছেন।’