আদি গঙ্গা। নাম থেকেই বোঝা যায় এই আদি গঙ্গাই একটা সময় গঙ্গার মূল স্রোত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে ক্রমশ মজে যায় এই আদি গঙ্গা। এদিকে সেই আদি গঙ্গার সংস্কার নিয়ে বছরের পর বছর ধরে নানা পরিকল্পনা। নানা স্বপ্ন দেখানো হয়েছে কলকাতাবাসীকে। কিন্তু বাস্তবে কাজ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা চলেছে। তবে এবার সেই ঐতিহাসিক আদি গঙ্গার সংস্কারে বিশেষ মন দিয়েছে কলকাতা কর্পোরেশন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডেক্সের পরিসংখ্যান অনুসারে জানা গিয়েছে, একটা সময় হুগলি নদীর অংশ ছিল এই আদি গঙ্গা। বিপ্রসাদ রচিত মনসামঙ্গল কাব্যে এই আদি গঙ্গার কথা উল্লেখ করা রয়েছে। কথিত আছে প্রাচীন কালে কালীঘাট, রাজপুর, বারুইপুর হয়ে আদিগঙ্গার এই পথ ধরেই গিয়েছিলেন বণিক চাঁদ সদাগর। এই আদিগঙ্গা দিয়েই তিনি নাকি গিয়েছিলেন বঙ্গোপসাগরে।
এমনকী কথিত আছে মহাপ্রভূ শ্রীচৈতন্যদেব এই পথেই গিয়েছিলেন একটা সময়। আদি গঙ্গা থেকে পুরী পর্যন্ত তিনি গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বারুইপুরের কাছে আতিসারা বলে একটা গ্রামে এসেছিলেন। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয় ১৫শতক থেকে ১৭ শতক পর্যন্ত এই আদি গঙ্গাই ছিল হুগলি নদীর মূল স্রোত। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণেই এটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সূত্রের খবর, সিঙ্গাপুরের ক্লার্কে কোয়াই এলাকার মতো করে আদিগঙ্গাকে সংস্কার করে সাজাতে চায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সোনারপুর থেকে দইঘাট পর্যন্ত আদি গঙ্গার পলি তোলার জন্য সরকার প্রায় ৩২ কোটি টাকা খরচ করছে। ১৫ কিমি এলাকা জুড়ে দফায় দফায় এই কাজ হতে পারে। সোনারপুর থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত এলাকায় খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হতে পারে। এনিয়ে টেন্ডারও ডাকা হয়েছে।
দইঘাটের কাছে একটা লকগেট করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এই গেটের মাধ্যমে পরিষ্কার জল আদিগঙ্গায় ফেলা হবে। আর দুষিত জল নদী থেকে বের করে দেওয়া হবে। নদীর পাড়ে যে জবরদখল হয়ে গিয়েছে সেগুলি সরানো হবে। বাংলার বাড়ি স্কিমের মাধ্যমে এটা করা হবে।