আলু, পিঁয়াজ ছাড়া বাজারে যে কোনও সবজির দামে হাত পুড়ছে মধ্যবিত্ত মানুষের। কয়েকদিন আগেও যে সবজি বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন সেই সবজির দাম সেঞ্চুরির পথে। আর তাতেই রবিবার সকালে যাঁরা ব্যাগ দুলিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন তাঁদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা। বাজারের থেকে তুলনায় কম দামে সবজি বিক্রি করছে। তাতে খানিকটা ক্ষতে প্রলেপ পড়ছে। তারপরও সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের প্রতি খোঁচা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই তাঁকে কটাক্ষ করলেন।
এখন বাজারে টমেটো ১২০ টাকা কেজি। সেখানে সুফল বাংলার মাধ্যমে ৮৯ টাকা কেজি দরে আমজনতার হাতে টমেটো তুলে দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু রান্নার গ্যাসের দাম ১২০০ টাকা থেকে নামেনি। তাই বাংলার মানুষের স্বার্থে নানা সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ও হে নন্দলাল, ১২০০ টাকা গ্যাসে পুড়ছে বিনা পয়সার চাল।’ এই রান্নার গ্যাসের দাম কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রয়েছে। তাঁরাই গ্যাসের দাম বাড়ায়–কমায়। আর এখন তা হাজার টাকা অতিক্রম করেছে। তাই এভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করতে দেখা যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ রেশনে বিনা পয়সায় চাল দেয় রাজ্য সরকার।
এবার তারই পাল্টা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, রবিবার তিনি একটি টুইট করেছেন। সেখানে সবজির আগুন দর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষাতেই তাঁকে খোঁচা দিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স বৈঠকে বসে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, টমেটো, করলা, পটল, বেগুন, ঢেঁড়সের মতো আনাজ সুফল বাংলায় ২০–২৫ শতাংশ কম দামে মিলবে। বাজারে কিলো ৭৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে করলা। সেটা মিলবে ৬৫ টাকায়। পটলও ৫ টাকা কমে কেজিতে মিলবে। বেগুন কেজি প্রতি ৮০ টাকার বদলে ৭০ টাকায় মিলবে। যদিও শুভেন্দুর দাবি, ‘জুন মাসের গোড়ায় বেশিরভাগ সবজির দাম চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকার মধ্যে ছিল সেটা আজ অবিশ্বাস্যভাবে বেড়ে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেক বুথে তিনটি ভোটদান কক্ষ রাখা দরকার’, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি বিমানের
ঠিক কী লিখেছেন টুইটে? সুফল বাংলায় সবজি কম দামে বিক্রি হলেও সেটা বিরাট ফারাক নয় বলে অনেকের মত। আর শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, সুফল বাংলায় দাম কমে সবজির সুফল ৫ শতাংশ মানুষও পায় না। আর তিনি টুইটে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘আরে ও নন্দলাল, গরীব মানুষের পাতে কি জুটবে শুধু নুনের সাথে মোদীজির দেওয়া বিনা পয়সার চাল? একমাস আগের বাজার দরের সঙ্গে বর্তমান বাজার দরের তফাৎ করলে বোঝা যাবে যে, হাটবাজারে আগুন লেগেছে। এটা বললেও বাড়াবাড়ি হবে না যে, সবজির দাম এই মুহূর্তে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল হঠাৎ করে বাজার হাটে শাক–সবজির দাম বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু আদতে তার প্রতিফলন কখনই দেখা যায় না।’