আজ, মঙ্গলবার হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় রাজভবনে প্রবেশ করে। তার পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠক করেন। সংঘাতের আবহে এমন বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী দুধ চা খেয়েছেন। কিন্তু বিস্কুট খাননি বলেই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার বাদল অধিবেশন নিয়ে নবান্ন–রাজভবন সংঘাত চরমে উঠেছিল। আজ সম্ভবত তা কিছুটা নমনীয় হল। তাই তো হালকা মেজাজে রাজভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বললেন, ‘দুধ চা খেয়েছি, বিস্কুট খাইনি। দু’টি বিল নিয়ে কথা হয়েছে রাজ্যপালের সঙ্গে।’
তবে রাজভবনের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করা কটাক্ষের জবাব দিলেন। আজ সকালে নয়াদিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ এবং ‘ইস্ট–ইন্ডিয়া কোম্পানি’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিকেলে রাজভবন থেকে বেরানোর সময় সেটার জবাব দিয়ে দিলেন পাল্টা খোঁচা দিয়েই। আর তারপর থেকেই সরগরম হয়ে উঠল জাতীয় রাজনীতির অলিন্দ। ইতিমধ্যেই এই ইন্ডিয়া টিমের রাজনীতিবিদরা লোকসভা–রাজ্যসভায় মণিপুর ইস্যুতে সরব হয়েছেন। বিরোধী দলের সাংসদরা তুমুল আন্দোলন শুরু করেছেন একজোট হয়ে।
এই বিরোধীদের একজোট হয়ে আন্দোলনে মেজাজ হারাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আজ নানা কটূক্তি করেছেন। আর এই বিষয়ে মখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা খোঁচা দিয়ে রাজভবনে দাঁড়িয়েই বলেন, ‘আমার মনে হয়, ‘ইন্ডিয়া’ নামটা ওনার পছন্দ হয়েছে। উনি গ্রহণ করেছেন। উনি যত ‘ইন্ডিয়া’ নামের সম্পর্কে সমালোচনা করবেন, বাজে কথা বলবেন, ততই মনে হবে প্রশংসা করছেন।’ এরপর তিনি বিধানসভায় আসার কারণ জানিয়ে বলেন, ‘বিধানসভায় বিল প্রায় হাতে নেই। সবই পাশ হয়ে গিয়েছে। তবু বছরে কিছুদিন অধিবেশন করতেই হয়। তাই রাজ্যপালকে বলে গেলাম দু’টি বিল হতে পারে। পাশ করার জন্য রাজ্যপালকে বলে গেলাম। যতক্ষণ রাজ্যপাল পাশ না করছেন ততক্ষণ আমরা বলি না। বিধানসভার কিছু ডেকোরাম রয়েছে।’
আরও পড়ুন: স্কুল ছুটি দেখে তিন বন্ধু বেরিয়েছিল, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল দু’জন মুর্শিদাবাদে
আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইন্ডিয়া নিয়ে কটাক্ষ করার জবাব টুইট করে আগেই দিয়েছেন লোকসভার সাংসদ মহুয়া মৈত্র, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সাকেত গোখলে। বিষয়টির যেন সমাপ্তি ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘ইন্ডিয়া টিম যখন খেলতে নামে তখন কি কেউ মুজাহিদিন বলে! দেশটার নাম কি, ইন্ডিয়া। আমরা ইন্ডিয়ার নাগরিক। ইন্ডিয়া নামের সঙ্গে যুক্ত করে ওরা যত বাজে কথা বলবেন, তত মনে হবে নামটা ওদের পছন্দ হয়েছে।’