রেশন দুর্নীতি নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। সেই আবহে পূর্বতন বাম সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। আজ, বুধবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে আগের সরকারের দুর্নীতি তিনি তুলে ধরেন। ২০০৭ সালে বামফ্রন্টের জমানায় রেশন দুর্নীতি শুরু হয়। সে কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে। সেখানে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। এই কথা তুলে ধরার পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বার্থে একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার বাংলার সরকারও নানা তদন্ত শুরু করবে বলে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে বিজেপিরও যে দুর্নীতি আছে সেটি ফাঁস করে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস যখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তখন ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। আমাদের সরকার সেই ১ কোটি কার্ড বাতিল করে। রেশন কার্ডের ডিজিটালকরণ ঘটিয়েছি আমরা। যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার শংসাপত্র পাঠিয়েছে। অনেক রেশন কার্ডও বাতিল করতে চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু আইনি বিধিনিষেধে সেটা হয়ে ওঠেনি। এখন রাজনৈতিক স্বার্থে নানা গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে লেবু বেশি কচলালে তেতো হয়ে যায়। এটা মনে রাখবেন।’
অন্যদিকে বিজেপির সম্পত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর রাজ্য সরকারও তদন্ত করতে শুরু করবে বলে জানান তিনি। এদিন নবান্নের সংবাদিক বৈঠকে সুর সপ্তমে চড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা জানি না বিজেপির কোন নেতার কত সম্পত্তি আছে। সেগুলি কী করে হল? এবার কাগজপত্র আমরাও বের করতে শুরু করব। তদন্ত আমরাও করতে পারি। এটা ভুলে যাবেন না। সহ্যেরও একটা সীমা–পরিসীমা আছে। কোনও কিছু লিমিটলেস হয়ে গেলে তখন বলতেই হয়। ইনভেস্টিগেশন আমরাও করব। তখন ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়বে। কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ‘গুরুদেবের অবজ্ঞা মেনে নেওয়া যায় না’, ফলক কাণ্ডে ফের সপ্তমে সুর রাজ্যপালের
রেশন দুর্নীতি প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাম আমলের অব্যবস্থার কথা এদিন তুলে ধরেন তিনি। আর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সিপিএম বড় বড় কথা বলছে। আদালত, ইডি বা সিবিআইকে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ে কিছু বলব না আমি। কিন্তু বলে রাখছি, আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড থাকার অর্থ, সেই রেশন কেউ না কেউ তুলতেন! সেই টাকা কোথায় যেত? আজ পর্যন্ত তদন্ত হয়েছে?’ এরপরই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টানা না মেলা নিয়ে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘১৬ নভেম্বর আমরা নেতাজি ইন্ডোরে সব পঞ্চায়েত, পুরসভা, গ্রাম সভা, জেলা পরিষদ, ব্লক সভাপতি, সাংসদ–বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। সেই বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। টাকা না দিলে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে।’