রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ভোটপ্রচারে খরচ করেছে তৃণমূল। এমনই চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গিয়েছে ইডি সূত্রে। ইডির তদন্তকারীদের দাবি, ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ও পরে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে কুন্তলের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় ভোটপ্রচার করেছে তৃণমূল। কার মাধ্যমে কী ভাবে টাকা খরচ হয়েছে তা জানতে তৃণমূলের একাধিক যুব নেতাকে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রে খবর, জেরায় কুন্তল স্বীকার করেছেন চাকরি বিক্রির টোপ দিয়ে ৩০ কোটি টাকা তুলেছিলেন তিনি। তার মধ্যে ১০ কোটি টাকা ধাপে ধাপে পৌঁছে দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। ওদিকে ইডি তদন্ত করে কুন্তল ও আত্মীয়দের ৩ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করেছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বাকি ১৭ কোটি টাকা গেল কোথায়? ইডির গোয়েন্দাদের দাবি, তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন ও ত্রিপুরা নির্বাচনে সেই টাকা খরচ হয়েছে।
ইডির গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ত্রিপুরা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন যুব তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। এদের প্রত্যেকেই কুন্তলের ঘনিষ্ঠ। এদের ত্রিপুরায় যাওয়া আসার বিমানের টিকিট, ত্রিপুরায় থাকার সমস্ত খরচ বহন করেছিলেন কুন্তল। এমনকী তদন্তকারীদের নজর এড়াতে সমস্ত টাকা মেটানো হয়েছিল নগদে। শুধু তাই নয়, এর মধ্যে একাধিক নেতার নামে বিনিয়োগও করেছিলেন কুন্তল।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন সবার নজর ছিল আদালতের নির্দেশে চলা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের দিকে।
বলে রাখি, ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের গোটা প্রচারের প্রধান মুখ ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন সায়নী ঘোষ, দেবাংশ ভট্টাচার্যের মতো যুব নেতারা। এছাড়া সেরাজ্যে তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে দলীয় কর্মীদের রোষ থেকে বাঁচাতে যাকে ত্রিপুরা পাঠিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ত্রিপুরায় ভোট প্রচারে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু ফল বেরোলে দেখা যায় সেরাজ্যে নোটার থেকে কম ভোট পেয়েছে তৃণমূল। এর পর সেরাজ্য থেকে পাত্তাড়ি গুটিয়ে চলে আসে ঘাসফুল শিবির।