এ যে অর্থনৈতিক অবরোধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। একদিকে বন্ধ রাখা হয়েছে একশো দিনের কাজের টাকা। আবার মেলেনি আবাস যোজনার টাকাও। অন্যান্য প্রকল্পের টাকা নানা অভিযোগ তুলে দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ বারবার করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আরও সাংঘাতিক ঘটনা ঘটেছে বলে সূত্রের খবর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছে এবং সামাজিক প্রকল্প নিয়ে এসে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তা দেখে ঋণ দিতে চেয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। এবার তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আর এই ঘটনা নিয়ে এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
বাংলার অর্থনীতি পঙ্গু করে দিতেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করছে নবান্ন। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা–সহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে না। অর্থাৎ এত বঞ্চনার পরও বাংলায় উন্নয়ন থেকে শুরু করে মানুষের জন্য সামাজিক প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেখানে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকা পেতে মোদী সরকার বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় আবার বঞ্চনার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। গঙ্গা–পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে কোনও টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। তাই অর্থের সংস্থান করতে উদ্যোগী হয় নবান্ন। আর বিশ্বব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের অর্থসাহায্যে ১৪০৩ কোটি টাকার প্রকল্প রূপায়ণের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় গঙ্গা–পদ্মার ভাঙন ঠিক করার কাজ চূড়ান্ত হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাঙ্কের থেকে এই ঋণ পেতে কেন্দ্রের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক।
এদিকে এই ছাড়পত্র পেতে গত ১০ মে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লেখেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই চিঠিতে লেখা হয়, ২০২০–২১ সাল থেকে এই দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থ সাহায্য নিয়ে (২৮০০ কোটি টাকা) সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে বাংলায়। এমনকী সেই কাজ দেখে অত্যন্ত সন্তোষজনক বলে জানিয়ে দিয়েছে খোদ বিশ্বব্যাঙ্ক। কিন্তু তারপরও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও প্রচেষ্টা দেখতে পাওয়া যায়নি। সেচ সংক্রান্ত প্রকল্প হওয়ায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক মুখ্যসচিবের ওই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে জলশক্তি মন্ত্রকে। এখন সেখানেই গোটা বিষয়টি আটকে রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘আমি অনুতপ্ত, টোলকর্মীকে ‘গলা ধাক্কা দিয়ে আক্রমণ করে সুর নরম করলেন সাংসদ
ঠিক কী বলছেন সেচমন্ত্রী? কিছুদিন আগে ভুটানের জল ছাড়ার জন্য প্লাবিত হয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলা। সেটা পরিদর্শন করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ তিনি এবারের বাদল অধিবেশনে বিধানসভাতেও তোলেন। আর বিজেপি বিধায়কদের জানান কেন্দ্রকে সাহায্য করতে বলার জন্য। এই আবহে ফের এমন অর্থনৈতিক প্যাঁচ কষায় মোদী সরকারের উপর বেজায় চটেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী। সংবাদমাধ্যমে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘এই ঘটনার থেকেই আবার একবার প্রমাণিত হল যে, আমরা নিজেদের চেষ্টায় কিছু করতে চাইলেও রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের অনুমোদন দেয় না। ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন দেবে বলেও মনে হয় না।’