সেরার তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করল ‘দেশদ্রোহী’ তকমা পাওয়া জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক প্রকাশিত NIRF র্যাঙ্কিং অনুযায়ী ভারতের প্রথম দশটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কেও পিছনে ফেলে দিয়েছে জামিয়া মিলিয়া।
২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) বিরোধী প্রতিবাদের কেন্দ্রস্থল হয়ে দাঁড়ানো জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে গ্রন্থাগারে পড়ুয়াদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশের দাবি, বহিরাগত বিক্ষোভকারীদের খোঁজে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক মিটার দূরে তারা অভিযান চালায়।
অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হস্টেল ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে দুই মাসের বেশি ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কট করেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। গত ৫ জানুয়ারি মুখোশধারী বহিরাগত দুষ্কৃতীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের বেধড়ক মারধর করে।
এই প্রথম দেশের সেরা দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। NIRF তালিকায় দশম স্থানে রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত বছর দ্বাদশতম স্থানে ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। ‘সামগ্রিক’ ফলের ভিত্তিতেও গতবারের ১৯ তম স্থান থেকে তিন ধাপ উঠে ষোড়শতম স্থানে রয়েছে জামিয়া মিলিয়া। মনে রাখতে হবে, এই বিভাগে রয়েছে আইআইটি, আইআইএম, আইআইএসসি-সহ দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপত নাজমা আখতার জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রতিক কালে যে সমস্ত বাধার সম্মুখীন হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিযোগিতার আবহে এই সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
NIRF-2020 সেরার তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগ, দশম স্থান অধিকার করেছে স্থাপত্য ও একিস্টিকস বিভাগ. ১৯ তম স্থান অধিকার করেছে ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং ৩৪ তম স্থান অধিকার করেছে ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
সামগ্রিক মূল্যায়নে একধাপ পিছিয়ে গিয়ে অষ্টম স্থান দখল করেছে জেএনইউ। গত বছর সপ্তম স্থান অধিকার করেছিল দিল্লির এই বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে এই প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে পয়লা নম্বরে রয়েছে জেএনইউ।
জেএনমইউ-এর উপাচার্য় এম জগদীশ কুমার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘গত চার বছর ধরে আমরা ধারাবাহিক ভাবে এই স্থান ধরে রেখেছি। শিক্ষক, কর্মী ও পড়ুয়াদের নিরলস পরিশ্রমেই তা সম্ভব হয়েছে। আমরা তাঁদের জন্য গর্বিত। উৎকর্ষ অর্জন করার পথে আমরা কোনও বাধাই মানব না।’
জেএনইউ ছাত্র সংসদ সভাপতি ঐশী ঘোষ টুইট করেছেন, ‘জেএনইউ আবার দ্বিতীয় স্থান দখল করল! দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া থেকে শুরু করে শাট ডাউন জেএনইউ প্রচারকারীদের মতো সব ঘৃণাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সফল হয়েছি। শিক্ষা ও সংগ্রামস নিয়ে দীর্ঘজীবী হোক জেএনইউ। #ProudJNUite।’