বাংলা নিউজ > কর্মখালি > Primary TET Scam: ১,০০০ কোটির প্রাথমিক TET ‘দুর্নীতি’ - শিক্ষকদের তথ্য তলবের পথ প্রশস্ত হয় আগেই
‘পাখির চোখ’ যে তিনটি প্রাথমিক টেটেই, তা আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল ইডি। এবার তাতে সিলমোহর পড়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে ২০১১ সাল থেকে প্রাথমিক স্তরে যতজন শিক্ষক চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের তথ্য চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেইমতো সব শিক্ষকদের থেকে দু'দিনের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য় জমা দিতে বলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
আরও পড়ুন: TeT: তৃণমূল জমানায় কাদের প্রাথমিকে চাকরি? জানতে চেয়ে জেলায় জেলায় চিঠি
তথ্য তলবের পথ প্রশস্ত হচ্ছিল আগে থেকেই
- রাজ্য পালাবদলের মোট তিনবার টেট হয়েছে - ২০১২ সাল, ২০১৪ সাল এবং ২০১৭ সালে। ২০১২ সালের টেটের যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল, তার ভিত্তিতে সেই বছরেই নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছিল। ২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০১৫ সালে হয়েছিল পরীক্ষা। ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে গত বছর জানুয়ারি টেট হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তবে নিয়োগ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
- ২০১৪ সালের টেট নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। দুই দফায় নিয়োগ হয়েছিল। প্রথম মেধাতালিকা নিয়ে সেভাবে অভিযোগ না থাকলেও দ্বিতীয় দফায় নিয়োগে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, ২০১৪ সালের টেটে প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল বলে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। পরবর্তীতে দেওয়া হয়েছিল সেই নম্বর। যদিও নিয়ম মেনে সেই নম্বর দেওয়া হয়নি। অযোগ্য প্রার্থীদের বাড়তি নম্বর দিয়ে নিয়োগ করা হয়েছিল। অথচ যোগ্য প্রার্থীদের নম্বর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের থেকে তালিকা তলব করেছে হাইকোর্ট।
- তারইমধ্যে ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে (২০১৪ সালের টেটের মাধ্যমে নিয়োগ) বরখাস্ত করেছিল হাইকোর্ট। পর্ষদের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের ২৬৯ জনকে অতিরিক্ত এক নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছিল। সেই নম্বরের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন। তারপরই তাঁদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎগঙ্গোপাধ্যায়।সেইসঙ্গেহাইকোর্টেরিপোর্টপেশেরনির্দেশদিয়েছিলেন।সেইরিপোর্টেপর্ষদেরতরফেদাবিকরাহয়েছিল, ২৬৯ নয়, মোট ২৭৩ জনকে অতিরিক্ত এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল।
- (২০১৪ সালের টেটের মাধ্যমে নিয়োগ) পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, একটি প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল। সেজন্য এক নম্বর বাড়ানো হয়েছিল। ভুল প্রশ্ন নিয়ে মোট ২,৭৮৭ টি আবেদন জমা পড়েছিল। তাঁদের মধ্যে ২৭৩ জন প্রশিক্ষিত ছিলেন। তাই তাঁদের বাড়তি এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল। মোট ১৮ লাখ প্রার্থী অনুত্তীর্ণ হলেও তাঁদের খুঁজে বের করা সম্ভব ছিল না। তাই যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদেরই বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে অপসারিত করেছিল হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: Primary TET: টেট বা শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ? সরাসরি জানাতে পারবেন পর্ষদের কাছে, কীভাবে?
- তারইমধ্যে ইডি সূত্রে খবর মিলেছিল, রাজ্যের তিনটি টেটের উপর নজর আছে কেন্দ্রীয় সংস্থার। ২০১২ সাল এবং ২০১৪ সালের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সুনিপুণভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে লাগামহীন দুর্নীতি বলে ধারণা কেন্দ্রীয় সংস্থার।
- সেই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের থেকে শিক্ষকদের তথ্য চেয়েছিল ইডি। রাজ্যের সব জেলার প্রাথমকি বিদ্যালয় সভাপতিদের চিঠি দিয়ে দু'দিনের মধ্যে ২০১১ সাল থেকে সব শিক্ষকের তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে পর্ষদ। মঙ্গলবার সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কর্মখালি খবর