মাইক্রোসফ্টে ৪৭ লক্ষ টাকা প্যাকেজের চাকরির প্রস্তাব পেলেন এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবক। মধ্যপ্রদেশের ২৫ বছর বয়সী যশ সোনাকিয়া এখন আইটি পড়ুয়াদের কাছে অনুপ্রেরণার অপর নাম। সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে মাইক্রোসফটে কাজের ডাক পেয়েছেন যশ।
২০২১ সালে ইন্দোরের শ্রী গোবিন্দরাম সেকসারিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (SGSITS) থেকে বিটেক করেন যশ। একেবারে ফ্রেশার হিসাবেই মাইক্রোসফ্টে ৪৭ লক্ষ টাকার বার্ষিক বেতন প্যাকেজের প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি।
পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে যশ বলেন, তিনি চাকরির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। শীঘ্রই একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে মাইক্রোসফটের বেঙ্গালুরু অফিসে যোগ দেবেন। যদিও প্রাথমিকভাবে তাঁকে বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
মাত্র আট বছর বয়সে যশ গ্লুকোমায় দৃষ্টিশক্তি হারান। কিন্তু পড়াশোনার অদম্য ইচ্ছা ও পরিবারের সহায়তায় তিনি এত দূর এগিয়েছেন বলে জানান।
'স্ক্রিন-রিডার সফ্টওয়্যারের সাহায্যে আমি পড়াশোনা করেছি। কলেজ শেষের পর চাকরিও খুঁজতে শুরু করি। কোডিং শিখি। তারপরে মাইক্রোসফ্টে আবেদন করি। একটি অনলাইন পরীক্ষা এবং সাক্ষাত্কার হয়। তারপরেই আমাকে সংস্থায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য সিলেকশন করা হয়েছে,' জানান যশ।
তাঁর বাবা যশপাল, একটি ক্যান্টিন চালান। তিনি জানান, জন্মের একদিন পরেই তাঁর ছেলের গ্লুকোমা ধরা পড়ে। শুরু থেকেই সেই কারণে দৃষ্টিশক্তি অনেকটাই কম ছিল। ছেলের যখন আট বছর বয়স, সেই সময়ে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। ওই ছোট্ট বয়স থেকেই ও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল। আর আমরা ওর পাশে যতটা সম্ভব দাঁড়িয়েছি। যশ আমার বড় ছেলে। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। অবশেষে অনেক সংগ্রামের পর ওর একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। চোখে জল গর্বিত বাবার।
যশপাল জানান, ছেলেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের স্কুলে পড়ান। তবে তারপরে তাঁকে একটি সাধারণ স্কুলেই ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর এক বোন অঙ্ক এবং বিজ্ঞানের পড়াশোনা, পরীক্ষা দিতে সাহায্য করত।