ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিশ্রুতির অভাবের কারণে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ইশান কিষাণ, শ্রেয়স আইয়ারদের। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন কিংবদন্তি প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক কপিল দেব।
তিনি রঞ্জি ট্রফির মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রথম-শ্রেণির ইভেন্টগুলিকে রক্ষা করার তাৎপর্যের উপর জোর দিয়েছেন এবং স্বীকার করেছেন যে, যদিও কিছু খেলোয়াড়ের জন্য কড়া হয়েছে বিসিসিআই, তবে এটিকে একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বলে মনে করেন কপিল দেব।
বিসিসিআই-এর নির্দেশ অবজ্ঞা করে ইশান কিষাণ এবং শ্রেয়াস আইয়ার রঞ্জি ট্রফিতে অংশ নেননি। যার ফলে তাঁদের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নানা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, কীর্তি আজাদ এবং ইরফান পাঠান সহ কিছু প্রাক্তন খেলোয়াড় আবার ইশানদের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন।
যদিও কপিল নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। তবে তিনি জোর দিয়েছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য বিসিসিআই-এর সিদ্ধান্তটি অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে কপিল রঞ্জি ট্রফির মতো প্রিমিয়ার ঘরোয়া প্রতিযোগিতার অখণ্ডতা এবং তাৎপর্য সংরক্ষণের বৃহত্তর উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
কপিল দেব বলেন, ‘কিছু প্লেয়ারের সমস্যা হতে পারে, সেটা হতে দেওয়াই উচিত। কারণ দেশের চেয়ে কেউ বড় নয়। ভালো হয়েছে।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘আমি বিসিসিআই-কে অভিনন্দন জানাই ঘরোয়া ক্রিকেটের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পরে, ঘরোয়া ক্রিকেটকে বাদ গুরুত্ব না দেওয়ায় আমি দুঃখিত।’
ইঙ্গিত আগে থেকেই ছিল। সেই মতোই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শ্রেয়স আইয়ার এবং ইশান কিষানকে। ২০২৪-২৫ মরসুমের জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা বুধবার প্রকাশ করেছে বিসিসিআই। বোর্ডের সিদ্ধান্তে আর্থিক ক্ষতি হল দুই ‘অবাধ্য’ ক্রিকেটারের।
২০২৩-২৪ মরশুমে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ছিলেন দু’জনেই। শ্রেয়স ছিলেন ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। ইশান ছিলেন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। নিয়ম মতো বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে বছরে ৩ কোটি টাকা বেতন পেতেন শ্রেয়স। ইশান বেতন হিসেবে পেতেন বছরে ১ কোটি টাকা। নতুন তালিকায় নাম না থাকায় বোর্ডের কাছ থেকে বার্ষিক বেতন হিসাবে কোনও টাকা পাবেন না তাঁরা।
ভারতের হয়ে খেললে ম্যাচ ফি এবং দৈনিক ভাতা বাবদ নির্দিষ্ট টাকা অবশ্য তাঁরা পাবেন। বোর্ডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী এক বছরে শ্রেয়স এবং ইশানের সামনে চুক্তির আওতায় আসার কোনও সুযোগ থাকবে না। বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রেয়সের বার্ষিক আয় কমছে ৩ কোটি টাকা এবং ঈশানের বার্ষিক আয় কমবে ১ কোটি টাকা।
কপিল দেব আরও বলেছেন, ‘এই বার্তাটি দেওয়ার সময় এসে গিয়েছিল এবং বিসিসিআইয়ের এই শক্তিশালী পদক্ষেপ ঘরোয়া ক্রিকেটের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘আমি সব সময়ে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের তাদের নিজ নিজ রাজ্যের হয়ে খেলার জন্য উপলব্ধ করার প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করি। এতে ঘরোয়া ক্রিকেটাররাও তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে লাভবান হবে।’