একসময় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রেম ছিল অভিনেত্রী মমতা শঙ্করের। দুজনের প্রেম জানত দুই বাড়ির লোক। এমনকী, বিয়ের তারিখও পাকা হয়ে গিয়েছিল। তবে হঠাৎই সরে যান দুজনে। কাকতালীয়ভাবে, মমতা শংকর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৭৮ সালে। আর ওই বছরই ছিল মিঠুন চক্রবর্তীরও প্রথম বিয়ে। এই সম্পর্ক নিয়ে আগেই লিখেছেন মিঠুন, ‘আমার নায়িকারা’ বইতে। এবার মুখ খুললেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রীও এক সাক্ষাৎকারে।
মমতা শঙ্কর নিবেদিতা অনলাইনকে জানালেন, ‘বাপিদা (চন্দ্রদয় ঘোষ)-র সঙ্গে আমার তখন বিয়ের কথা চলছিল। এরপর মৃগয়া-র শ্যুটে আলাপ মিঠুনের সঙ্গে। বাপিদার সঙ্গেও মিঠুনের আলাপ করিয়েছিলাম আউটডোর শ্যুটে যাওয়ার আগে। সেটে যে কোথা থেকে কী হয়ে গেল। আমি অনেক কষ্টে নিজেকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। যে বাপিদাকে আমি ঠকাব না! কিন্তু কীভাবে কী হয়ে গেল…’
আরও পড়ুন: ৫ এপিসোডের জন্য ‘ঘুষ লাগবে’ ২ লাখ! সারেগামাপা নিয়ে উঠল নতুন দুর্নীতির অভিযোগ
মমতা শঙ্কর আরও বললেন, ‘একদিকে ভালো হয়েছে বাপিদাকে আমি আরও ভালো করে চিনতে পেরেছি। কারও সঙ্গে কিছু না হলে হয়তো, এত ভালো করে চিনতে পারতাম না। মিঠুনের বাড়ির লোকের সঙ্গেও আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। ওঁর বোনরা সবসময় আমার খোঁজ নিত।’
তবে মিঠুনের সঙ্গে বিয়ে তারিখ ঠিক হলেও বিয়েটা হয়নি। মমতা শঙ্কর জানান, মিঠুনই আসলে তখন রাজি হননি বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। সদ্য হিট আসতে শুরু করেছিল কেরিয়ারে। সেসব জলাঞ্জলি দিয়ে ছাদনাতলায় তখনই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না তাঁর!
আরও পড়ুন: ‘ইশক মুঝে ভি…’! ৮ মাসের মেয়ের মৃত্যু, কবে আসবে কাবো-পূজার দ্বিতীয় সন্তান?
এরপর সেই পুরনো প্রেম, বাপিদা ওরফে বর্তমান স্বামী চন্দ্রদয় ঘোষের কাছেই ফিরে যান মমতা শঙ্কর। যদিও উদ্যোগটা এসেছিল বিপরীত তরফ থেকেই। ফোন করেছিলেন হবু শাশুড়ি। ফোন করে, ছেলের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন মমতা শঙ্করকে। অভিনেত্রী বললেন, ‘ও ফোনটা ধরে এমন করে কথা বলা শুরু করল যেন আমাদের মধ্যে কিছুই হয়নি। আমি তো ওর গলা শুনে কেঁদে অস্থির। আমাকে বলল, মমতা আই হেট টিয়ার্স! আমি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলাম না। ফোন রাখতে চাইল বলল, 'কথা দাও ফোন করবে। তবে কাল না পরশু ফোন করো'। এরপর নিজেই বলল, কাল একটা মেয়ে দেখতে যাচ্ছি। আমার জন্য নয় বন্ধুর। আর আমি প্রশ্ন করলাম, 'তোমার জন্য দেখবে কবে'? ওপাশ থেকে উত্তর এল, 'আমি তো সেই কবেই দেখে রেখেছি'।’
আরও পড়ুন: তৃতীয়বার বিয়ে ধর্মেন্দ্রর! বাবার বিয়েতে না থাকা নিয়ে মুখ খুললেন সানি-ববি দেওল
এরপর বিয়ের খবর দিয়েছিলেন মমতা শঙ্কর নিজে গিয়েই মিঠুন চক্রবর্তীকে। এক রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে মুখোমুখি হতেই বলেছিলেন, ‘তোর সঙ্গে কথা আছে একটা’। বুঝে নেন মিঠুন নিমেষে। বলেন, ‘কী বলবি? বিয়ে করছিস তো? আমিও বিয়ে করছি।’
একই বছরে, মিঠুন বিয়ে করেন হেলেনাকে। আর মমতা শঙ্কর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তাঁর প্রথম ভালোবাসার সঙ্গেই।
শুধু দেরিতে বিয়ে করতে চাওয়াই কি ছিল বিয়ে ভাঙার কারণ? ‘তুমি নাকি বম্বেতে গিয়ে মিঠুনের সঙ্গে সারিকা-সহ আরও অনেকের সম্পর্কের আভাস পেয়ে ফিরে এসে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলে?’, প্রশ্ন করা হয় এই সাক্ষাৎকারে মমতাকে। একটু চুপ করে থেকেই উত্তর দেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী, ‘এগুলো হয়েছিল ঠিকই। তবে মিঠুন আমাকে পরে বলেছিল, এগুলো তখন ওর কেরিয়ারের জন্য করতে হয়েছিল। সেরকম কিছু ছিল না ওই সম্পর্কগুলোতে। তবে সেই সময় ওটা একটা ট্রমা ছিল আমার কাছে।’
তবে দুই প্রাক্তন মমতা শঙ্কর আর মিঠুন চক্রবর্তী এখন সত্যিকারের বন্ধু। ভালো সহকর্মী। প্রজাপতি ছবিতে কাজ করেছেন তাঁরা। যেখানে তাঁদের কেমিস্ট্রি খুব পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা।