সপ্তাহের প্রথম দিনের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ অনেক কিছু দিয়ে গেল। সোমবারের ম্যাচেও বৃষ্টি আসায় খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। তবে অন্যান্য দিনের মতো মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারেনি। রবিবার ভারত যেখানে শেষ করেছিল সেই জায়গা থেকেই শুরু করে। বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুলের যুগলবন্দী ভারতের ইনিংস গড়ে দিয়ে যায়। এই দুই ব্যাটারকে আউট করতেই পারেননি পাকিস্তানের বোলাররা। যার ফল তাদের ভুগতে হল। ৩৫৬ রানের বিরাট লক্ষ্যমাত্রার চাপ নিয়ে ব্যাটে নামতে হয়। বিরাট ও রাহুল দুই জনেই করে যান সেঞ্চুরি। বিরাট কোহলি ৯৪ বলে করেন অপরাজিত ১২২ রান অন্যদিকে কেএল রাহুল ১০৬ বলে অপরাজিত ১১১ রান করেন।
দীর্ঘ প্রায় চার মাস পরে চোট কাটিয়ে দলে ফিরে এসেছেন কেএল। অনেকদিন ধরেই তাঁর ব্যাটে রান নেই। সেই একটা চাপ আগে থেকেই ছিল রাহুলের মধ্যে। রান করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। শুরুটাও বেশ দ্রুতগতিতে করেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। সময় যত বাড়তে থাকে পাক বোলারদের ওপরে ততই শাসন করতে থাকেন রাহুল। ১১১ রানের ইনিংসে মারেন ১২টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, হিসাব করলে দেখা যাবে এই ইনিংসের ৬০ রান এসেছে বাউন্ডারিতে বাকি রান সিঙ্গেলসের মাধ্যমে করেন তিনি। চোট কাটিয়ে দলে ফিরে আসার পর রাহুলের এই ফিটনেস বেশ চাপমুক্ত রাখবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে।
(এশিয়া কাপের পয়েন্ট তালিকা দেখার জন্য ক্লিক করুন এখানে)
অন্যদিকে একদিনের ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড করেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এই ম্যাচ যেন আগে থেকেই বিরাটের নামে লেখা ছিল। দ্রুত ১৩ হাজার রান করার নজির গড়েন তিনি। ২৬৭ ইনিংসে এই কীর্তি করলেন তিনি। একদিনের ক্রিকেটে ৪৭টি শত রানের মালিক হন এই ম্যাচে। রেকর্ডের ফুলঝুরি ঘটে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে। তবে এদিনের ইনিংসটা একটু ধীরগতিতেই শুরু করেছিলেন কিং কোহলি। তাঁর অর্ধশত রান আসে ৫৫ বলে। এরপরেই নিজের রং দেখাতে থাকেন বিরাট। বাকি ৫০ রান করতে নেন ২৯ বল। এখানেই থামেননি ওভার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজের ব্যাট চালিয়ে যান। সবথেকে বড় ব্যাপার হলো বিরাটের এই রাজকীয় ইনিংসে বাউন্ডারি থেকে রান এসেছে মাত্র ৫৪। বাকি রান তিনি দৌড়ে নিয়েছেন। এই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
ম্যাচ শেষের পর বিরাট কোহলি বলেন, 'আমি আমার খেলাকে সবসময় এমন ভাবে খেলতে চাই যাতে দলকে সাহায্য করতে পারি। এই ইনিংসেই আমি খুব ভালোভাবে শুরু করতে পারিনি। আমার থেকে রাহুল অনেক সুন্দরভাবে ইনিংস শুরু করে। আমি ওকে স্ট্রাইকে রাখার চেষ্টা করছিলাম ফলে দুটো করে রান নিয়েছি। হ্যাঁ, তারপরে আমি ধীরে ধীরে ফিরে আসি। যেরকম আমি চাইছিলাম তেমনটাই হতে থাকে। বড় শট খেলার থেকে দুটো করে রান নেওয়া অনেক সহজ। এর উপকারিতা আগেও পাওয়া গিয়েছে আজকেও পাওয়া গেল। আশা করি পরের ম্যাচগুলিতে এই ভাবেই এগিয়ে যেতে পারব।'
(এশিয়া কাপে কার কবে খেলা জানার জন্য ক্লিক করুন এখানে)
এই ম্যাচে রাহুল ও বিরাট দু'জনে ২৩৩ মিলে রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন যা এশিয়া কাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান করা পার্টনারশিপ। এই বিষয়ে কোহলি বলেন, 'আমি এবং রাহুল দু'জনেই ক্রিকেটের প্রথাগত পদ্ধতিতে খেলে যেতে ভালোবাসি। আমরা অন্যরকম শট খেলা থেকে একটু দূরেই ছিলাম এই ম্যাচে ফলে আউট করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা দু'জনেই পার্টনারশিপ নিয়ে বেশি কিছু ভাবি নি মাথাই শুধু ছিল ব্যাট করে যেতে হবে। এই পার্টনারশিপটা আমাদের ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম যুগলবন্দি। দীর্ঘদিন বাদে দলে ফিরে এসে অসাধারন খেলেছে রাহুল যা আমাদের দলের জন্য অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ।'
পাক ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই নামতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। ক্লান্তি বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। এই প্রসঙ্গে বিরাট বলেন, 'আমার ১৫ বছরের কেরিয়ারে এই প্রথম ওডিআই ম্যাচ খেলার পর ফের নামতে হচ্ছে। তবে কোনও রকম সমস্যা হবে না। কারণ আমরা প্রত্যেককেই টেস্ট ক্রিকেটার। আমরা সৌভাগ্যবান টেস্ট ক্রিকেটার হয়ে, তাই জানি কিভাবে ম্যাচে ফিরে আসতে হয়। এছাড়াও আমি এই স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ড স্টাফদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই।'
(এশিয়া কাপের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে- https://bangla.hindustantimes.com/cricket/asia-cup)
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড বিস্তারিত ক্রীড়াসূচি - এর জন্য চোখুন HT Bangla - তে