শেষ কয়েক বছরে বিশ্বক্রিকেটে সব থেকে চর্চার বিষয় হল ব্যাজবল। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ইংল্যান্ড দলের কোচ হওয়ার পর থেকেই টেস্ট সিরিজ আসলেই , সঙ্গে চলে আসে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের চেনা ব্যাজবল প্রসঙ্গ। এবার এই নিয়েই মুখ খুললেন প্রাক্তন ইংলিশ ক্রিকেটার জিওফ্রে বয়কট। স্পষ্টতই বলছেন, ব্যাজবলটেকনিক রপ্ত করা ভালো কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে কমন সেন্স ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি টেস্ট ফর্ম্যাটের জন্য। নাহলে দলের ভারসাম্য নষ্ট হবে। তার এই কথা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক, কারণ কয়েক সপ্তাহ আগেই শেষ হওয়া ভারত-ইংল্য়ান্ড টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পারফরমেন্স। যেখানে বারংবার দেখা গেছে, দলের যখন পরপর উইকেট পড়ছে তখনও আগ্রাসী মেজাজেই খেলছেন ক্রিকেটাররা। টেস্ট ক্রিকেটের চিরাচরিত ধরে খেলার রীতি থেকে অনেকটা দুরে, যা দেখেই বেজায় চটেছেন ৮৩ বছর বয়সি এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। শেষমেষ সেই সিরিজে এগিয়ে গিয়েও ৪-১ ফলে হারতে হয় ইংল্যান্ডকে।
আরও পড়ুন-IFA-র অনুমোদন পেল জেভিয়ার্স, প্রেসিডেন্সি সহ ১২, আসছে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের টুর্নামেন্ট
ইংল্যান্ড কিংবদন্তী জিওফ্রে বয়কট বলছেন, 'অ্যাশেজ সিরিজেও একই ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দুটি টেস্টে হেরেছি, সঙ্গে সিরিজে জেতা হয়নি। ভারতের বিপক্ষেও বোকার মতো খেলেছে ইংল্যান্ড। ভারতে আসার আগে ক্রিকেটাররা বলেছিল আবু ধাবিতে চুটিয়ে অনুশীলন করে তাঁরা এসেছেন। অথচ অশ্বিন, জাদেজা, কুলদীপরা কোনও পরিশ্রম না করে সহজেই ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম টেস্ট ক্রিকেটকে নতুন পথ দেখাতে চাইছে। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাঁচাতে চাইছে সেটাও ইতিবাচক দিক, কিন্তু ম্যাচে জয়টাই আসল হওয়া উচিত। শুধু ভালো খেললে হবে না যদি ম্যাচ বা সিরিজ না জিততে পারে'।
আরও পড়ুন-কম টাকার জন্যই কি আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ালেন হাসারাঙ্গা?
ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি যথেষ্টই বিরক্ত দলের ম্যানেজমেন্টের পর। পেসার জিমি অ্যান্ডারসনের প্রশংসা করেও বয়কট বলছেন, ‘জিমি খুব ভালো বোলার নিঃসন্দেহে। কিন্তু এক সময় আরও ভালো বোলার ছিল। ৭০০ উইকেট নিয়েছে জিমি টেস্ট ক্রিকেটে। কিন্তু শেষ কবে এক ইনিংসে ২০ ওভার বল করেছে অ্যান্ডরসন? সাধারণত ১২ থেকে ১৪ ওভার বল করছে। এটা বাকি বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, সেটা বুঝতে হবে। এই জিমি নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে হবে ইংল্যান্ডকে। ভারতের অশ্বিন, জাদেজা, কুলদীপরা ৯০০ উইকেট নিয়ে ফেলেছেন প্রায়, আর আমাদের বেন স্টোকস তো বোলিংই করতে চায় না’।
উল্লেখ্য ভারতের বিপক্ষে সিরিজে বিভিন্ন ইংলিশ ক্রিকেটারই ব্যাজবল নিয়ে বড়াই করেছিলেন। যেমন অ্যান্ডরসন বলেছিলেন,' ভারত ৬০০ রান করলেও আমরা সেটা চেজ করব'। বেন ডাকেট বলেছিলেন,'ভারতের যশস্বী জয়সওয়াল ব্যাজবল দেখে পিঞ্চ হিটিং শিখেছেন'। জো রুটের মত টেস্ট ক্রিকেটারকে দ্রুত গতিতে রান তুলতে গিয়ে বারবার উইকেট হারাতে হয়েছে। দলের ক্রিকেটারদের ওপর বাড়তি ভরসা করতে গিয়ে ইংল্যান্ড কোচ ম্যাককালামের ভুলেই গেছিলেন হয়ত ডাকেট বা ক্রলিদের এই মূহূর্তে কোয়ালিটি তার মতো নয়। এই মুহূর্তে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ক্রমতালিকায় বেশ পিছনের দিকে ইংল্যান্ড। ইংলিশ সামারে তারা কিছুটা উন্নতি করতে পায় কিনা ব্যাজবল খেলে, এখন সেটাই দেখার।