শুভব্রত মুখার্জি:- ভারতে এসে স্পিন বোলিং সহায়ক পিচে খেলতে গিয়ে বারবার অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতন ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের তরফে। বল পড়ে পিচ ভাঙলে বা পিচ থেকে ধুলো উঠলে বা তাড়াতাড়ি টেস্টে হারলেই এই অভিযোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। অন্যদিকে এই সব দেশেই যখন ভারত সহ অন্যান্য দেশ খেলতে যায় তখন তাদের জন্য অপেক্ষা করে ঘাসে ভরা সবুজ পিচ। যেখানে প্রথম বল থেকেই সিম, সুইং এবং বল অস্বাভাবিক বাউন্স করা শুরু করে। যা নিঃসন্দেহে বিপদজনক হতে পারে ব্যাটারদের জন্য। অনেকটা তেমন ধাঁচের পিচ তৈরি করা হয়েছিল নিউল্যান্ডস কেপটাউনে। যেখানে দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে কার্যত ২২ গজ বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের কাছে। ফলস্বরূপ মাত্র দেড়দিনেই টেস্ট জিতে নিয়েছে ভারত। আর এই জয়ের পরেই কার্যত তোপ দেগেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
ম্যাচে জেতার পরে কেপটাউনের পিচ নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রোহিত শর্মা। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য আমার বা আমাদের এমন পিচে খেলতে কোন অসুবিধা নেই। তবে ভারতের পিচ নিয়েও যেন অভিযোগ না করা হয়। পাশাপাশি তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য আইসিসি নিশ্চয় নজর রাখছে এই ধরনের পিচের উপর। রোহিতের সোজাসাপ্টা বক্তব্য আশা করি এই পিচ দেখার পরেও আইসিসি ঘুমিয়ে থাকবে না। ভারত অধিনায়কের মতে ‘এই ম্যাচ (কেপটাউন টেস্ট) কোন পিচে খেলা হল, তা তো আমরা সকলেই দেখলাম। এই ধরনের পিচে খেলতে ব্যক্তিগতভাবে আমার বা আমার দলের কোনও সমস্যা নেই। তবে এরপর ভারতের পিচ নিয়ে যেন কেউ কোনও কথা বলতে না আসে। এরপর আর ভারতের পিচ নিয়ে কিন্তু কারুর কোনও কথা বলা মানায় না। পিচে ধুলো উড়ছে এইসব বাজে অজুহাত যেন তখন কেউ দেখাতে না আসে।’
ঘটনাচক্রে কেপটাউন টেস্টে দুই দিনও সম্পূর্ণ খেলা হয়নি। মাত্র দেড় দিনে শেষ হয়েছে এই টেস্ট। প্রথমদিনে পড়েছে দুই দলের ২৩টি উইকেট । শেষ হয়েছে দুই দলের একটি করে ইনিংস। আর দ্বিতীয় দিন পড়েছে ১০ টি উইকেট। অর্থাৎ দুইদিন মিলিয়ে মোট ৪০ উইকেটের মধ্যে পড়েছে ৩৩ উইকেট। আর তাতেই ফয়সালা হয়েছে কেপটাউনের টেস্টের। সিরিজ শেষ পর্যন্ত ড্র করে ফিরেছে ভারতীয় দল। কিন্তু এরপরেও ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার মেজাজ যেন সপ্তমে ছিল। টেস্ট ম্যাচ শেষে রোহিত পিচ নিয়ে আইসিসির দ্বিচারিতাকে সামনে এনেছেন। ভারতের স্পিন সহায়ক পিচ নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নির্ধারিত পাঁচ দিন সময়ের আগেই ম্যাচ শেষ হলেই যাওয়ায় ভারতীয় ২২ গজ টেস্ট ম্যাচ খেলার যোগ্য নয় এমন একটা ছবি তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে বারবার। গত ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনাল আয়োজন করা হয় আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। সেখানকার পিচকেও সাধারণ মানের রেটিং দেওয়া হয়েছে আইসিসির তরফে। কেপটাউন টেস্ট জিতে ঘুরিয়ে সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন রোহিত। প্রসঙ্গত কেপটাউনের পিচ নিয়ে ভারত অধিনায়কের গলার সুর শোনা গিয়েছে প্রাক্তন তারকা প্রোটিয়া পেসার অ্যালান ডোনাল্ডের গলাতেও। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য আমি কেপটাউনে এমন পিচ এর আগে দেখিনি।