শুভব্রত মুখার্জি: আজ থেকে ঠিক ১৩ মাস আগে এক শীতের রাতে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন ভারতীয় কিপার ব্যাটার ঋষভ পন্ত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষে যে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন পন্ত, তাতে তাঁর বেঁচে থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এমন কী পন্ত নিজেও যেন মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছিলেন। সেই সময়ে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল পন্তের কাছে যে, তিনি কোনও দিন মাঠে ফিরতে পারবেন কিনা, হাঁটতে পারবেন কিনা, সেই সব নিয়েও প্রশ্নের উঠেছিল নিজের মনে। এমন কী পা কেটে বাদ দিতে হতে পারে, এমন ভয়ও গ্রাস করেছিল পন্তকে!
ভারতের এই কিপার ব্যাটার ‘দ্বিতীয় জীবন’ পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করছেন। গাড়ি দুর্ঘটনা পন্তকে জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সব সময়ে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখতে হয় বলেই জানিয়েছেন পন্ত। ২২ মার্চ থেকে শুরু হবে আইপিএলের নতুন মরশুম। সেখানেই ফের ২২ গজে ফিরতে পারেন পন্ত।
আরও পড়ুন: সম্ভবত দেশের বাইরে রয়েছেন কোহলি, বাকি তিন টেস্টে বিরাটকে নাও পাওয়া যেতে পারে- রিপোর্ট
স্টার স্পোর্টসকে তাঁর ভয়াবহ দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন পন্ত। সব সময় নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখার যে শিক্ষাটা পন্ত পেয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করেই স্টার স্পোর্টসের বিশেষ অনুষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিলিভ: টু ডেথ অ্যান্ড ব্যাক।’ ২৬ বছর বয়সী পন্ত সেখানে অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন। ভারতের হয়ে ৩৩টি টেস্ট, ৩০টি ওডিআই এবং ৬৬টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন পন্ত। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি থেকে গাড়ি চালিয়ে রুরকি যাচ্ছিলেন পন্ত। ডিভাইডারের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় তাঁর গাড়ির। পন্ত বলেছেন, ‘জীবনে প্রথম বারের মতো সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, পৃথিবীতে আমার সময় শেষ।’ জীবনে প্রথম বারের মতো এই রকম (মৃত্যু ঘটতে পারে) কিছু মনে হয়েছিল। দুর্ঘটনার সময় শরীরে কতটা আঘাত লেগেছে, তা উপলব্ধি করতে পারতাম। জানতাম, চোট আরও খারাপ হতে পারত। পা-ও কেটে বাদ দিতে হতে পারত। তা হয়নি বলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পুরো টেস্ট সিরিজেই সম্ভবত পাওয়া যাবে না জাদেজা এবং শামিকে
পন্ত আরও যোগ করেছেন, ‘দুনিয়ার সব বিষয় থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমি সেরে ওঠাতে মনোযোগী হয়ে পড়ি। বড় কোনও আঘাতে এমন মানসিকতা সেরে ওঠার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। সেই জন্য প্রতিদিনই একই কাজ করতে হয়। বিরক্তিকর ও হতাশার হলেও করতে হয়। কারণ সেরে উঠতে হলে তা করতেই হবে। ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চাই না। চিকিৎসকদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম, সেরে উঠতে কত দিন সময় লাগবে? তাঁকে বুঝিয়ে বলেছিলাম বিষয়টি। বলেছিলাম, আপনি আমাকে সঠিক তথ্য দিন। চিকিৎসক বলেছিলেন, ১৬-১৮ মাস সময় লাগবে। আমি তাঁকে বলেছিলাম, আপনি যে সময়ই বেঁধে দিন না কেন, আমি সেখান থেকে ছয় মাস সময় কমিয়ে ফেলব।’