পাকিস্তান ক্রিকেটে বিতর্ক যেন থামছেই না। নতুন, নতুন নাটক। সঙ্গে জন্ম দিচ্ছে একাধিক বিতর্ক। এবার নির্বাচকমণ্ডলীর উপদেষ্টা হিসাবে সলমন বাটের নিয়োগ নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে পাক ক্রিকেটে।
নির্বাচকমণ্ডলীর উপদেষ্টা হিসাবে সলমন বাটকে নিয়োগ করার একদিন পরেই, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানিয়ে দিয়েছে যে, জনরোষের কারণে প্রাক্তন পাক অধিনায়ককে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পিসিবি-র প্রধান নির্বাচক এবং প্রাক্তন ফাস্ট বোলার ওয়াহাব রিয়াজ এক সংবাদিক সম্মেলনে এই কথা ঘোষণা করেন।
রিয়াজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বলেন, ‘লোকেরা আমার এবং সলমন বাট সম্পর্কে বিভিন্ন ধরণের কথা বলছিলেন। তাই, আমি সিদ্ধান্ত বদল করি। এবং আমি ইতিমধ্যেই সলমন বাটের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমি ওঁকে বলেছি যে, তিনি আমার দলের অংশ হতে পারবেন না।’
প্রাক্তন পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা তাদের নির্বাচক কমিটিতে এমন একজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ক্রিকেট বোর্ডের তীব্র নিন্দা করেছিলেন, যিনি অতীতে ম্যাচ গড়াপেটার মতো ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রামিজ রাজা বলেন, ‘এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। একটা জাতীয় নির্বাচক প্যানেলে কী করে সলমন বাটের মতো ম্যাচ গড়াপেটায় অভিযুক্ত একজনকে যুক্ত করা হয়। আর কামরান আকমল, যার ক্রিকেট মাঠে আচরণ নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কী করে থাকেন। আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তাহলে আমি একটা কথাই বলব, সেটা হল এই কলঙ্কিত ক্রিকেটারদের নিজেদের মুদির দোকান খুলে বসা উচিত। এঁদের ক্রিকেটে ফেরার কোনও যোগ্যতা নেই।’
শুক্রবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দিয়েছিলেন, নির্বাচকমণ্ডলীর পরামর্শদাতা হিসাবে সলমন বাট, কামরান আকমল এবং রাও ইফতিকার অঞ্জুমকে নিয়োগ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের পর আগামী বছর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে পাকিস্তান, সেই দল বেছে নেওয়াই হবে এই পরামর্শদাতাদের প্রথম কাজ। নির্বাচনের কাজে যুক্ত না থাকার সময়ে, তাঁরা স্কিল ক্যাম্প আয়োজনে সাহায্য করবেন। আর এর পরেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। বিশেষ করে সলমন বাটকে নিয়ে।
হেডিংলেতে পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে গড়াপেটায় যুক্ত ছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক সলমন বাট। যার জেরে ২০১০ সালে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছিল সলমন বাটকে। মহম্মদ আমির ইচ্ছাকৃত ভাবে একটি নো বল করেছিলেন। সেটি তদন্তকারীদের নজরে এসেছিল। তদন্তের পর বাট এবং আমির দোষী প্রমাণিত হন। ২০১৬ সালে নির্বাসন শেষ হওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলেন সলমন। কিন্তু জাতীয় দলে আর কখনও নেওয়া হয়নি তাঁকে। গড়াপেটায় যুক্ত থাকা এমন একজন ক্রিকেটারকে নির্বাচকমণ্ডলীর উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত করার কারণেই তীব্র ভাবে সরব হয় পাক ক্রিকেট। যার জেরে, সলমন বাটকে দায়িত্ব থেকেই সরানো হল।