গত বর্ডার-গাভাসরক ট্রফির আগে অস্ট্রেলিয়া শিবিরের প্রধান মাথাব্যাথা ছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাই তাঁকে সামলানোর জন্য আলাদাভাবে মহড়া চালান স্টিভ স্মিথরা। বছরের শুরুর দিকে ভারত সফরে এসে আলুরে সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি শিবির সারে অস্ট্রেলিয়া। সেই শিবিরের প্রধান চমক ছিলেন মহেশ পিথিয়া, নেটে যাঁর মোকাবিলা করার পরে অশ্বিনের বিরুদ্ধে মাঠের লড়াইয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া।
এবার বিশ্বকাপের আগে ফের পিথিয়ার ডাক পড়ে অজি শিবিরে। যদিও এবার অজিদের ডাকে সাড়া দেননি মহেশ। অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী আন্তর্জাতিক দলের সাপোর্ট বোলার হওয়ার লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পিথিয়া ঘরোয়া মরশুমের প্রস্তুতিতে মন দেওয়াই শ্রেয় মনে করেন।
কে এই মহেশ পিথিয়া:-
মহেশ পিথিয়া হলেন ভারতের একজন ২১ বছরের ঘরোয়া ক্রিকেটার। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে বরোদার হয়ে মাঠে নামেন। তরুণ এই স্পিনার অল-রাউন্ডার এখনও পর্যন্ত ৪টি ফার্স্ট ক্লাস ও ১টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ১১৬ রান করার পাশাপাশি ৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
এমন আনকোরা ভারতীয় ক্রিকেটারকে অস্ট্রেলিয়ার দরকার পড়ে কেন:-
আসলে পিথিয়ার বোলিং অ্যাকশন হুবহু রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো। তাঁকে অশ্বিনের কার্বন কপি বললেও ভুল বলা হয় না মোটেও। অশ্বিনের বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে সড়গড় হওয়ার জন্যই নেটে পিথিয়ার মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেন অজি ব্যাটসম্যানরা। যার সুফলও পায় তারা। বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে অশ্বিনের সামনে তুলনায় আত্মবিশ্বাসী দেখায় স্মিথদের। যদিও নেটে পিথিয়া যারপরনাই বিব্রত করেন অজি ব্যাটারদের।
ফের কেন পিথিয়ার ডাক পড়ে অজি শিবিরে:-
মহেশ পিথিয়ার কাছে আগেই বার্তা ছিল যে, অশ্বিন যদি ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকেন, তবে পিথিয়াকে ডাকা হতে পারে অস্ট্রেলিয়ার নেটে। কেননা আগামী ৮ অক্টোবর চেন্নাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধেই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া। বিসিসিআই অক্ষর প্যাটেলের বদলি হিসেবে অশ্বিনের নাম সরকারিভাবে ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জুড়ে দেওয়ার পরেই ফোন যায় পিথিয়ার কাছে। তড়িঘড়ি চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার নেটে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় তাঁকে।
পিথিয়া কেন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন:-
প্রাথমিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার নেটে স্টিভ স্মিথদের বল করার সুযোগ পাবেন ভেবে উৎসাহী ছিলেন পিথিয়া নিজেও। তবে অচিরেই শুরু হতে চলেছে বরোদার ঘরোয়া মরশুম। তাই কোচের সঙ্গে আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল না মহেশের। কোচের পরামর্শ মতোই তিনি ঘরোয়া মরশুমের প্রস্তুতিতে মন দেওয়া উচিত মনে করেন এবং অজিদের ডাকে সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
যদিও শুধুই ঘরোয়া মরশুমের প্রস্তুতির জন্য এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন পিথিয়া, এমনটা মেনে নেওয়া ক্রিকেটপ্রেমীদের পক্ষে মুশকিল। কেননা স্টিভ স্মিথদের নেটে বল করার থেকে ভালো প্রস্তুতি আর কী হতে পারে, সেই বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করবেন অনেকেই। বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজের দেশকে বিপাকে ফেলতে না চাওয়াই পিথিয়ার আসল উদ্দেশ্য কিনা, সেই প্রশ্নের যথাযথ জবাব একমাত্র তিনিই দিতে পারবেন।