রবিবার বিধায়কদের বৈঠক নেহাত নিয়মরক্ষার হতে চলেছে। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ জানতে পেরেছে, শনিবার রাতের দিকে অসমের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। সোমবার অসমের দ্বিতীয় বিজেপি সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। পরে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালকে দিল্লিতে আনা হতে পারে। এমনিতেই এখন অসম থেকে একটি রাজ্যসভার আসন ফাঁকা আছে।
রবিবার দুপুরেই সম্ভবত চূড়ান্ত ঘোষণা হবে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্তের নাম প্রস্তাব করবেন সোনোওয়াল। সেই প্রস্তাবে সমর্থন জানাবেন অসমের রাজ্য বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত কুমার দাস। তবে ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় হিমন্ত ঘনিষ্ঠরা ঘোষণা করে দিয়েছেন যে অসমের মসনদে বসতে চলেছেন বিদায়ী বিজেপি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যিনি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হয়ে উঠেছেন।
এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল সোনোওয়াল এবং হিমন্তের। সেজন্য কোনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা না করেই বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কে হবেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী? প্রথম থেকেই সেই দৌড়ে কিছুটা এগিয়েছিলেন হিমন্ত। তবে তাতে চূড়ান্ত সিলমোহর দিতে সোনোওয়াল এবং হিমন্তকে দিল্লিতে তলব করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সেইমতো শনিবার সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট নাগাদ দিল্লিতে অবতরণ করেছিলেনন অসমের বিজেপির দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা। দু'জনের সঙ্গে ছিলেন নাহারকাটিয়ার বিধায়ক তরঙ্গ গগৈ এবং তিনখংয়ের বিধায়ক বিমল বোরা। হিমন্তের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তরঙ্গ। বিমল আবার সর্বানন্দ গোষ্ঠীর বিধায়ক। সেই দৃশ্য থেকে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য ছিল, মুখে সেভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও সোনোওয়াল এবং হিমন্তের মধ্যে যে ঠান্ডা লড়াই চলছে, তা একেবারে স্পষ্ট।
বিমানবন্দরের বাইরেও সেই ‘ঠান্ডা লড়াইয়ের’ রেশ ধরা পড়েছিল। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে সোজা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার বাসভবনে গিয়েছিলেন হিমন্ত। ততক্ষণে অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সাংগঠনিক) বি এল সন্তোষও সেখানে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, ৪৫ মিনিট মতো তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ নড্ডার বাসভবন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন হিমন্ত। তারপরই নড্ডার বাসভবনে ঢুকেছিলেনন সোনোওয়াল। যিনি বিমানবন্দর থেকে দিল্লিতে নিজের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। ঘণ্টাখানেক পরে আবারও নড্ডার বাসভবনে ফিরে এসেছিলেন হিমন্ত। সেখানে সোনোওয়াল এবং হিমন্তের উপস্থিতিতে আরও ঘণ্টাদেড়েক বৈঠক চলেছিল। পরে রাতে বিশেষ বিমানে দু'জনে একসঙ্গে গুয়াহাটিতে ফেরেন। সূত্রের খবর, ততক্ষণে হিমন্তের নামে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে গিয়েছে। সোমবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন নড্ডাও।